জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলত কি? এই বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টটি।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমআর মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে।” (নাসাঈ, সুনান, বায়হাকী,হাকেম, মুস্তাদরাক, সহিহ তারগিব ৭৩৫ নং)
অন্য বর্ণনায় আছে, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে তার জন্য তার ও কা’বা শরীফের মধ্যবর্তী জ্যোতির্ময় হবে।” (বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, জামে ৬৪৭১নং)
উল্লেখ্য যে, জুমআর সময় মসজিদে এই সূরা তেলাওয়াত করলে এমনভাবে তেলাওয়াত করতে হবে, যাতে অপরের ডিষ্টার্ব না হয়।
আর পড়ুনঃ জুমার দিনের ফজিলত এবং গুরুত্বপূর্ণ আমলস
জ্ঞাতব্য যে, এ দিনে সূরা দুখান পড়ার হাদীস সহীহ নয়। (যইফ জামে ৫৭৬৭, ৫৭৬৮নং) যেমন আলে ইমরান সূরা পাঠ করার হাদীসটি জাল। (যইফ জামে ৫৭৫৯নং)
তদনুরুপ জুমআর নামায পড়ে ৭ বার সূরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক, নাস পড়ে অযীফা করার হাদীসদ্বয়ের ১টি জাল এবং অপরটি দুর্বল হাদীস। (যইফ জামে ৫৭৫৮, ৫৭৬৪, সিলসিলাহ যায়ীফাহ, আলবানী ৪৬৩০নং) সুতরাং এমন অযীফা পাঠ বিদআত। (মু’জামুল বিদা’ ১২২, ৩২৬পৃ:)
বৃহস্পতিবার মাগরিবের পর থেকে শুক্রবার মাগরিবের পূর্বেই এই গুরুত্বপূর্ণ আমল করা শুরু করুন:
জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলতসমূহ
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমআর মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে।”(নাসাঈ, সুনান, বায়হাকী,হাকেম, মুস্তাদরাক, সহিহ তারগিব ৭৩৫ নং)
অন্য বর্ণনায় আছে, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে তার জন্য তার ও কা’বা শরীফের মধ্যবর্তী জ্যোতির্ময় হবে।” (বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, জামে ৬৪৭১নং)
সুরা কাহাফ শুক্রবারে পাঠ করার ফযিলত,দাজ্জালের ফিতনা হতে রক্ষাঃ শুক্রবার কি সুরা কাহাফ পুরাটা পড়তে হবে নাকি প্রথম ১০ আয়াত পড়লেই হবে ?
(ক) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ“ যে ব্যক্তি জুমআর রাত্রিতে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা হতে পবিত্র মক্কাপর্যন্ত একটি নূর হবে ” । [সহীহ তারগীব ওয়াত্ তারহীব, হাদীছ নং- ৭৩৬]
অন্য বর্ণনায় এসেছে,নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেনঃ“ যেব্যক্তি জুমআর দিনে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তারজন্য পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত আলোকময় হবে ” । [সহীহ তারগীব ওয়াত্ তারহীব, হাদীছ নং- ৭৩৬
(খ) আবূ দরদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দিক থেকে দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের (ফিতনা) থেকে পরিত্রাণ পাবে।”
অন্য বর্ণনায় ‘কাহাফ সূরার শেষ দিক থেকে’ উল্লেখ হয়েছে। (মুসলিম) [1] আমি (আলবানী) বলছিঃ দ্বিতীয় বর্ণনাটি শায আর প্রথম বর্ণনাটি নিরাপদ (সহীহ্) যেমনটি আমি “সিলসিলাহ্ সহীহাহ্” গ্রন্থে (নং ৫৮২) তাহকীক্ব করেছি।
এর সাক্ষ্য দিচ্ছে নাওয়াস ইবনু সাম‘আনের আগত হাদীসটি। যেটিকে (১৮১৭) নম্বরে লেখক উল্লেখ করেছেন। কারণ এতে বলা হয়েছে যে, তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি দাজ্জালকে পেয়ে বসবে সে যেন তার বিপক্ষে সূরা কাহাফের প্রথম অংশ পাঠ করে। মুসলিম ৮০৯, তিরমিযী ২৮৮৬, আবূ দাউদ ৪৩২৩, আহমাদ ২১২০০, ২৬৯৭০, ২৬৯৯২ হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
(গ). নবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেনঃ“ যে ব্যক্তি সূরা কাহাফপাঠ করবে,কিয়ামতের দিন তারজন্য এমন একটি নূরহবে, যা তার অবস্থানের জায়গাথেকে মক্কাপর্যন্ত.আলোকিত করে দিবে। আরযে ব্যক্তি উহারশেষ দশটি আয়াত পাঠ করবে,
তার জীবদ্দশায়দাজ্জাল বের হলেও সে তার কোন ক্ষতি করতেপারবে না।[সিলসিলায়ে সহীহা,হাদীছনং-২৬৫১]
শুক্রবার কি সুরা কাহাফ পুরাটা পড়তে হবে নাকি প্রথম ১০ আয়াত পড়লেই হবে ?
শুক্রবারে সূরা কাহাফ পড়ার যে ফযীলত সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে তা পেতে হলে পুরোটা পড়তে হবে। অন্যথায় সে ফযীলত পাওয়া যাবে না।
এক বসাতে পড়তে না পারলেও সমস্যা নাই। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুরু করে জুমার পূরো দিনের মধ্যে তা পড়তে পারলেও উক্ত ফযীলত পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
🔘 আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়বে তার জন্য এক জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত আলো বিচ্ছুরিত হবে।
( মুসতাদারেক হাকিম: ২/৩৯৯, বায়হাকী: ৩/২৪৯, ফয়জুল ক্বাদীর: ৬/১৯৮)
🔘 ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। (আত তারগীব ওয়া তারহীব: ১/২৯৮)
তবে দশ আয়াত পড়ার বা মুখস্ত করার আলাদা ফযীলত রয়েছে।* যেমন,
আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দিক থেকে দশটি আয়াত মুখস্ত করবে,সে দাজ্জালের(ফিৎনা) থেকে পরিএাণ পাবে।’’
অন্য বর্ণনায় ‘কাহফ সূরার শেষ দিক থেকে’ উল্লেখ হয়েছে। (মুসলিম ৮০৯)
-উত্তর দিয়েছেন Shaikh Abdullahil Hadi
জুমার দিনে অনন্য দোয়া পাঠের ফজিলত সমূহ
♦বেশী বেশী দরুদ পাঠ :
ছোট দুরুদ:
اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহা’ম্মাদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন।
♦জুমআর রাতে (বৃহ্স্পতিবার দিবাগত রাতে) ও (জুমআর) দিনে প্রিয়তম হাবীব মহানবী (সাঃ)-এর শানে অধিকাধিক দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। মহানবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল, জুমআর দিন। এই দিনে তোমরা আমার প্রতি দরুদ পাঠ কর। যেহেতু তোমাদের দরুদ আমার উপর পেশ করা হয়ে থাকে। (আবূদাঊদ, সুনান ১৫৩১নং)
তিনি আরো বলেন, “জুমআর রাতে ও দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর। আর যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, সে ব্যক্তির উপর আল্লাহ ১০ বার রহ্মত বর্ষণ করবেন।”(বায়হাকী, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৪০৭নং)
♦জুম্মার দিনে দুয়া কবুল হয়। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা জুমার দিন সম্বন্ধে আলোচনা করে বললেন,
“ওতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নামায অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তা দান করে থাকেন।”
এ কথা বলে তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত। (বুখারী ও মুসলিম)
আবূ বুর্দাহ ইবনে আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আপনি কি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে আপনার পিতাকে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করতে শুনেছেন?’
তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হ্যাঁ। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “সেই মুহূর্তটুকু ইমামের মেম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ের ভিতরে।” (মুসলিম)
♦হাদীসে এসেছে দোআ কবুলের সময় হল আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত। (বুখারি ৯৩৫, মুসলিম ৮৫২)
আসরের ওয়াক্ত হলে আসরের সালাত আদায় করে মাসনুন যিকির করতে পারেন। কোরআন তেলওয়াত করতে পারেন।
আরো পড়ুন,
রমজান মাসের দোয়া এবং আমল সমূহ