মৃত্যু নিশ্চিত তাতে কোন সন্দেহ নেই। অথচ অধিকাংশ মানুষ তা থেকে গাফেল। একজন মুসলিমের
করনীয় হল, মৃত্যুর কথা বেশী বেশী স্মরন করা এবং তার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকা।
অনুরুপ ভাবে দুনিয়াতে থাকতে সময় ফুরিয়ে যাওয়ার পূর্বেই আখেরাতের পাথেয় সঞ্চয় করা।
“প্রত্যেক প্রানীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে”
[সূরা আল-ইমরানঃ১৮৫]
“এই পৃথিবীতে সবই ধ্বংসশীল”
[সূরা আর রহমানঃ২৬]
“চিরন্তনতা তো তোমার পূর্বের কোন মানুষের জন্য সাব্যস্ত করে দেইনি”
[সুরা আম্বিয়াঃ৩৪]
” তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও”
[সুরা নিসাঃ৭৮]
আপনি কি চাননা মু’মিন হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে।
মু’মিনের বিদায়লগ্ন হয় অত্যান্ত আনন্দের।
পক্ষান্তরে কাফির,জালিম সম্প্রদায়ের বিদায়লগ্নও হয় অত্যান্ত ভয়ংকর। মু’মিনের নিকট যখন মৃত্যু আসে, তখন মৃত্যুর ফেরেশতা সুন্দর মনোহর রুপ ও আকৃতি নিয়ে উপস্থিত হোন। সুগন্ধে ভরে যায় পরিবেশ।
আর তার সাথে থাকেন রহমতের ফেরেশতা, যারা উক্ত ব্যাক্তিকে জান্নাতের সু-সংবাদ
দেন।আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় যারা বলেঃ আমাদের প্রতিপালক ও মালিক আল্লাহ এবং তারা এর উপর সুদৃঢ় ও অটল থাকলো, নিঃসন্দেহে তাদের জন্য ফেরেশতা অবতরন ক’রে বলেন, ভয় পেয়োনা, চিন্তা করোনা আর সেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়ে সন্তুষ্ট হও, তোমাদের নিকট যার অঙ্গীকার করা হয়েছে।”
[সূরা হা-মীম -আসসাজদাহঃ৩০]
পক্ষান্তরে যারা ম’মিন হতে পারল না তাদের কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরন করবে তাদের কাছে মৃত্যুর ফেতেশতা ভীতিপ্রদ আকৃতি ধারন করে ও কালো চেহারা নিয়ে আসেন এবং তার সাথে থাকে আযাবের ফেরেশতা যারা তাকে আযাবের দুঃসংবাদ দেন।
আল্লাহ তা’আলা বলেন
“তুমি যদি দেখতে পেতে (ঐ সনয়ের অবস্থা) যে সময় যালিমরা সম্মুখিন হবে মৃত্যু যন্ত্রনায়; আর ফেরেশতারা হাত বাড়িয়ে বলবেঃ নিজেদের প্রানগুলো বের কর, আজ তোমাদেরকে সেসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে লাঞ্চনাময় শাস্তি দেয়া হবে যে, তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যা দোষারোপ করে অকারন প্রলাপ বকছিলে এবং তার আয়াতসমূহ কবূল করা হতে অহংকার করছিলে।”
[সূরা আল-আন’আমঃ৯৩]
মৃত্যু এলে বাস্তব সত্য উন্মোচিত হয়ে যাবে এবং আসল তত্ত্ব প্রত্যেক মানুষের কাছে সু-সস্পষ্ট হয়ে যাবে।
আল্লাহ বলেন,
“যখনই তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন সে বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে পুনরায় ফেরত পাঠান। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি যা আমি পূর্বে করিনি; না এটা হবার নয়; এটা তার একটা উক্তি মাত্র; তাদের সামনে বারযাখ (পর্দা, প্রতিবন্ধক, অন্তরায়) থাকবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।”
[সুরা মু’মিনুনঃ৯৯-১০০]
মৃত্যু এলে কাফের ও পাপী লোক ভাল ও সৎ কাজ করার জন্য পুনরায় পার্থিব জীবনের দিকে ফিরে যেতে চাইবে কিন্তু সময় শেষ হওয়ার পর অনুশোচনা কোন কাজে আসবে না।
আল্লাহ বলেন,
” তুমি দেখবে পাপাচারীরা যখন আযাব প্রত্যক্ষ করবে, তখন তারা বলবে আমাদের ফিরে যাওয়ার কোন উপায় আছে কি?”
[সূরা আশ শুরাঃ৪৪]
আনাস (রাঃ) হতে বর্নিত, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তিনটি জিনিস মৃত ব্যাক্তির সঙ্গে
যায়ঃ তার আত্বীয়-স্বজন, তার মাল ও তার আমল। অতঃপর দু’টি জিনিস ফিরে আসে এবং একটি জিনিস রয়ে যায়। তার আত্বীয়-স্বজন ও তার মাল ফিরে আসে এবং তার আমল (তার নিজের সঙ্গে) রয়ে যায়।
(বুখারিঃ৬৫১৪, মুসলিমঃ২৯৬০, তিরমিযীঃ ২৩৭৯)
সময় থাকতে সাবধান হোন।
আরো পড়ুন,
রমজান মাসের দোয়া এবং আমল সমূহ