রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি তা জেনে নিন এবং সে অনুযায়ী আমল করুন-
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি তা যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে আমাদের রমজানের রোজা পালন করতে খুবই সুবিধা হবে তো চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ দুই ভাগে বিভক্ত:
১. রোজা ভঙ্গের কিছু বিষয় রয়েছে যা শরীর থেকে কোন কিছু নির্গত হওয়ার সাথে সম্পৃক্ত-
যেমন: সহবাস, ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা, মহিলাদের হায়েয ও নিফাসের রক্ত বের হওয়া, শিঙ্গা লাগানো কিংবা এ জাতীয় অন্য কোন কারণে রক্ত বের করা।
২.আর কিছু রোজা ভঙ্গের বিষয় রয়েছে সেগুলো শরীরে প্রবেশ করানোর সাথে সম্পর্কযুক্ত । যেমন- খাওয়া দাওয়া বা কোনো কিছু পানাহার করা।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারমে সূরা বাকারা ১৮৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সাওম ভঙ্গের কারণ গুলোর মূলনীতি উল্লেখ করেছেন:
“এখন তোমরা নিজ স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু লিখে রেখেছেন তা (সন্তান) তালাশ কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কালো সুতা থেকে ভোরের শুভ্র সুতা পরিস্কার ফুটে উঠে” [সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭]
আরো পড়ুন,
রমজান মাসের দোয়া এবং আমল সমূহ
রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন
তাই এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে রোজা ভঙ্গের কিছু কারণ নিচে দেয়া হলো-
- ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
- স্ত্রী সহবাস করলে।
- ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
- কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)।
- নস্য গ্রহণ করা, নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
- ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
- রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
- মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া এ অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।
- কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
- সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
- পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
- দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
- ধূমপান করা, ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
- মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে।
মৌলিকভাবে রোজা ভঙ্গের ৭টি কারণ পাওয়া যায়
- স্ত্রী সহবাস করা
- পানাহার করা
- এমন কিছু যা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা
- মহিলাদের হায়েয ও নিফাসের কারণে রক্ত বের হওয়া
- হস্তমৈথুন করা
- শিঙ্গা লাগানো বা এমন জাতীয় কোন কাজ করা
রোজা ভঙ্গের কারণ বিষয়ক কিছু মাসআলা মাসায়েল এবং হাদিস
- ভুলবশত স্ত্রী সম্ভোগের রোজা ভেঙ্গে গেছে, এটি মনে করা এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করলে।( ফাতাওয়া শামী, খন্ডঃ৩, পৃষ্ঠাঃ ৩৭৫)।
- মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এই অবস্থায় ঘুম থেকে ওঠা সাদিকের সময়। ( এমদাদুল ফাতাওয়া, খন্ডঃ২, পৃষ্ঠাঃ ১৭২)।
- আমাদের যদি ভুলবশত কোন খাবার বা পানি পান করে ফেলি কিন্তু যদি আমরা ভেবে নেই যে রোজা ভেঙে গেছে এবং তখন আমরা ইচ্ছেকৃতভাবে আবার খাবার অথবা পানি পান করি। ( ফাতওয়া শামি, খন্ড- ৩, পৃষ্ঠা- ৩৭৫)।
- রোজা রাখার পরে যদি আমরা কোন মাদক সেবন করি। যেমনঃ সিগরেট, হুক্কা ইত্যাদি। ( জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খন্ড- ০১, পৃষ্ঠা- ৩৭৮)।
- কাঁচা চাল, আটার খামি বা অনেক বেশি পরিমাণে লবণ খেলে। (ফাতওয়া আল- হিন্দিইয়্যা, খন্ড- ০১, পৃষ্ঠা- ১৯৯)।
- বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যনালীর ভেতরে চলে যাওয়া। ( ফাতাওয়া আল- হিন্দিইয়্য, খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২০৩)।
- সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে ইফতার করা। (বুখারি, হাদিসঃ ১৯৫৯)।
- কাউকে জোরজবস্তি করে পানাহার করিয়ে দেওয়া। (ফাতাওয়া আল- হিন্দিইয়্য, খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২০২)।
- হস্তমৈথুন করা। (ফাতাওয়া হারুল উলুম দেওবন্দ, খন্ডঃ ৬, পৃষ্ঠাঃ ৪১৭)।
- রোজা থাকা অবস্থায় যদি কুলি অথবা নাকে পানি দেওয়া হয় আর সেই সময় যদি কণ্ঠনালীতে পানি চলে যাওয়া। (আহসানুল ফাতাওয়া, খন্ডঃ ৪, পৃষ্ঠঃ ৪২৯)।
- রাত মনে করে সুবহে সাদিকের পর সেহেরী খাওয়া। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ৩৭৮)।
- দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে এবং সে পরিমাণ বেশি হয় এবং কণ্ঠনালীতে চলে গেলে। (ফাতাওয়া শামি, খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৩৬৭)।
- যদি কেউ রাত ধারণা করে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয় এবং অতঃপর সুবহে সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষনাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যায়। (ফাতাওয়া শামি, খন্ডঃ৩, পৃষ্ঠাঃ ৩৭৪)।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির, খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৩৩৭)।
- কানে বা নাকের ছিদ্র তে তরল জাতীয় কোন ঔষধ দেওয়া। ( ইমদাদুল ফাতাওয়া, খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ১২৭)।
- পাথর, কাদামাটি, তৃণলতা,তুলা, সুতা, কংকর, খরকুটো এবং কাগজ গিলে ফেলা। ( ফাতাওয়া আল- হিন্দিইয়্য, খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২০৩)।
- এমন কোন বস্তু খেয়ে ফেলা যা সাধারণত খাওয়া হয়না। যেমনঃ লোহা, কাঠ, কয়লা, পাথর, মাটি ইত্যাদি। ( ফাতাওয়া আল- হিন্দিইয়্য, খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ৩৭৮ )
- নিজের থুতু গিলে ফেলা। (ফাতাওয়া আল- হিন্দিইয়্য, খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২০২)।
- এমন কোনো বস্তু খাওয়া, যা সাধরণত খাওয়া হয় না। যেমন- কাঠ, লোহা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২; জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
- পাথর, কাদামাটি, কঙ্কর, তুলা-সুতা, তৃণলতা, খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেলা। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০৩)
- নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২)
- হস্তমৈথুন করা। (ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ, খণ্ড : ০৬, পৃষ্ঠা : ৪১৭)
- রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি কিংবা নাকে পানি দেওয়ার সময় কণ্ঠনালিতে পানি চলে যাওয়া। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা : ৪২৯)
- কাউকে জোর-জবদস্তি করে পানাহার করানো। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২)
- রাত মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরি খাওয়া। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৩৩৭)
- সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে দিনে ইফতার করা। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৯)
- যদি কেউ রাত ধারণা করে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়ে যায়, অতঃপর সুবহে সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যায়। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৪)
- ভুলে খাওয়া বা পান করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
- বিড়ি-সিগারেট বা হুঁকা সেবন করা। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
- কাঁচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেক লবণ খাওয়া। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ১৯৯)
- বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যানালির ভেতরে চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০৩)
- মহানবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “যার অনিচ্ছাকৃত বমি আসে, তাকে সিয়াম কাযা করতে হবে না, আর যে ইচ্ছাকৃত বমি করে, সে যাতে তা কাযা করে (তিরমীজি)”।
- মুখ খোলা রাখার কারণে বৃষ্টির পানি কণ্ঠনালীতে প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
- হস্তমৈথুন, আলিঙ্গন, অথবা চুম্বনের মাধ্যমে বির্যপাত ঘটালে রোজা ভঙ্গ হবে। তবে স্বপ্নদোষ বা রোগের কারণে বির্যপাত হলে রোজা ভঙ্গ হবে না। কেননা এতে রোজাদারের কোন ইচ্ছা ছিল না।
- দাঁতে আটকে থাকা ছোলা পরিমাণ বা তার চেয়ে বড় খাদ্যদ্রব্য গিলে ফেললে অথবা এর চেয়ে কম পরিমাণ মুখ থেকে বের করে পূণরায় গিলে ফেললে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
- দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয়ে তা কণ্ঠনালীতে পৌঁছালে এবং রক্তের স্বাদ অনুভূত হলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
- কুলি করার সময় অসতর্কতার কারণে কণ্ঠনালীতে পানি প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
- ভুলে স্ত্রী সম্ভোগের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে— আবার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস সম্পর্ক করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
- কানে বা নাকের ছিদ্র দিয়ে তরল ওষুধ দেওয়া। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১২৭)
- দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি তা থুতুর চেয়ে পরিমাণে বেশি হয় এবং কণ্ঠনালিতে চলে যায়। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৬৭)
- মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক করা। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১৭২)
রোজার মাকরুহগুলো:
- অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা
- কোনো দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখা
- গড়গড় করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে
- ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গলাধঃকরণ করা
- গীবত, গালা-গালি ও ঝগড়া-ফাসাদ করা। কেউ গায়ে পড়ে ঝগড়া-ফাসাদ করতে এলে বলবে, আমি রোজাদার তোমাকে প্রত্যুত্থর দিতে অক্ষম
- সাড়া দিন নাপাক অবস্থায় থাকা। এটি অত্যন্ত গুনাহের কাজ
- অস্থিরতা ও কাতরতা প্রকাশ করা
- কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার, পেস্ট ও মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা
- রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ এখানে তুলে ধরা হলো-
- সারাদিন রোজা সঠিকভাবে করার পরেও সন্ধ্যায় ইফতারির সময় আপনি যদি এমন কোনও খাবার গ্রহণ করেন যেটি ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম, তাহলে আপনার রোজাটি মাকরুহ হবে।
- রোজা অবস্থায় ঝগড়া করা, গালি-গালাজ করা।
- মুখে অধিক পরিমাণ থুথু একত্রে গিলে ফেলা ।
- দাঁতে ছোলা/বুটের চেয়ে ছোট কোন বস্তু আটকে থাকলে তা বের করে মুখের ভিতর থাকা অবস্থায় গিলে ফেলা।
- নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না এরূপ মনে হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুম্বন করা ও আলিঙ্গন করা। আর রোজা অবস্থায় স্ত্রীর ঠোঁট মুখে নেয়া সর্বাবস্থায় মাকরূহ।
- নিজের মুখ দিয়ে চিবিয়ে কোন বস্তু শিশুর মুখে দেয়া। তবে অনন্যো
- কারণ ছাড়াই কিছু চিবুতে থাকলে রোজা মাকরুহ হবে।
- কোনও কিছু স্রেফ মুখে পুরে রাখলেন, খেলেন না তাতেও রোজা মাকরুহ হবে।
- গড়গড়া কুলি করা অথবা নাকে বেশি গভীরে পানি দেওয়া।
- মুখের লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পেটে গেলে ক্ষতি নেই, তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে থুথু ধরে রেখে পরে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে।
- রমজানের সারাটি দিন শরীর নাপাক রাখলেও রোজা মাকরুহ হবে।
- কোনও বিষয়ে অস্থির হয়ে উঠলে কিংবা কাতরতা দেখালে রোজা মাকরুহ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে কোনও কোনও ব্যাখ্যা।
- পাউডার, পেস্ট ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিস্কার করলে রোজা মাকরুহ হয়ে যায়।
- মুখে গুল ব্যবহার মাকরুহ এবং থুথুর সঙ্গে গুল গলার ভেতর চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
- রোজা রেখে কারো গিবত করলে বা পরনিন্দা করলে রোজা মাকরুহ হয়।
- মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ। রোজা রেখে এ কাজটি করলে তা মাকরুহ হবে।
- রোজা রেখে ঝগড়া-বিবাদ করলে রোজা মাকরুহ হবে।
- যৌন উদ্দিপক কিছু দেখা বা শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতেও রোজা মাকরুহ হয়।
- নাচ, গান, সিনেমা দেখা ও তাতে মজে থাকলে রোজা মাকরুহ হয়।
- রান্নার সময় রোজাদার কোনও কিছুর স্বাদ নিলে, লবন চেখে দেখলে, ঝাল পরীক্ষা করলে মাকরুহ হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজনে সেটা যদি করতেই হয়, তাহলে বৈধ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
- গোসল ফরজ হয়েছে, এমন অবস্থায় নাপাক থেকে সারাদিন অতিবাহিত করা।
- রোগী বা কোন পরীক্ষার জন্য শরীর দুর্বল হয়ে যায়, এমন পরিমাণ রক্ত দেওয়া।
- রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট-মাজন ব্যবহার করা মাকরুহ। কেননা তা কণ্ঠনালীতে প্রবেশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি – by Mizanur Rahman Azhari
রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি – by Sheikh Ahmadullah
মেয়েদের রোজা ভঙ্গের কারণ
রোজা ভঙ্গের কারণগুলোর প্রায় সবই নারী পুরুষ সকলের জন্যই সার্বজনীন। তবে মেয়েদের জন্য বিশেষ কারণ হচ্ছে হায়েজ/নিফাজ/মাসিক/পিরিয়ড। মাসিক চলাকালীন মেয়েদের ওপর রোজা আর ফরজ থাকে না বরং নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
এমনকি রোজা রাখা অবস্থায়ও যদি মাসিকের রক্তস্রাব শুরু হয়ে যায়, তাহলে রোজা ভেঙ্গে যায়। একইভাবে প্রসবকালীন সময়েও রোজা ভেঙ্গে যায়।
ইচ্ছাকৃত রোজা ভঙ্গের কাফফারা
- যেসব কারণে রোজা না রাখলে ক্ষতি নেই তবে কাযা আদায় করতে হবে:
- কোনো অসুখের কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাযা করতে হবে।
- গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাযা করে দিতে হবে।
- স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাযা আদায় করতে হবে।
- শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে। তবে রাখাই উত্তম।
- কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে। পরে এর কাযা করতে হবে।
- কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তবে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। পরে তা কাযা করতে হবে।
- হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে।
- অনিচ্ছাকৃত গলার ভেতর ধুলা-বালি, ধোঁয়া অথবা মশা-মাছি প্রবেশ করা।
- অনিচ্ছাকৃত কানে পানি প্রবেশ করা।
- অনিচ্ছাকৃত বমি আসা অথবা ইচ্ছাকৃত অল্প পরিমাণ বমি করা (মুখ ভরে নয়)।
- বমি আসার পর নিজে নিজেই ফিরে যাওয়া।
- চোখে ওষুধ বা সুরমা ব্যবহার করা।
- ইনজেকশন নেয়া।
- ভুলক্রমে পানাহার করা।
- সুগন্ধি ব্যবহার করা বা অন্য কিছুর ঘ্রাণ নেয়া।
- নিজ মুখের থুথু, কফ ইত্যাদি গলাধঃকরণ করা।
- শরীর ও মাথায় তেল ব্যবহার করা।
- ঠাণ্ডার জন্য গোসল করা।
- মিসওয়াক করা। যদিও মিসওয়াক করার দরুন দাঁত থেকে রক্ত বের হয়। তবে শর্ত হলো গলার ভেতর না পৌঁছানো।
- ঘুমের মাঝে স্বপ্নদোষ হলে।
- স্ত্রীলোকের দিকে তাকানোর কারণে কোনো কসরত ছাড়া বীর্যপাত হলে।
- স্ত্রীকে চুম্বন করলে, যদি বীর্যপাত না হয় (রোজা না ভাঙলেও এটা রোজার উদ্দেশ্যের পরিপন্থী)।
- দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা গোশত খেয়ে ফেললে (যদি পরিমাণে কম হয়), পরিমাণ বেশি হলে রোজা ভেঙে যাবে।
রোজা মাকরুহ হওয়ার কারণ এখানে তুলে ধরা হলো-
- সারাদিন রোজা সঠিকভাবে করার পরেও সন্ধ্যায় ইফতারির সময় আপনি যদি এমন কোনও খাবার গ্রহণ করেন যেটি ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম, তাহলে আপনার রোজাটি মাকরুহ হবে।
- রোজা অবস্থায় ঝগড়া করা, গালি-গালাজ করা।
- মুখে অধিক পরিমাণ থুথু একত্রে গিলে ফেলা ।
- দাঁতে ছোলা/বুটের চেয়ে ছোট কোন বস্তু আটকে থাকলে তা বের করে মুখের ভিতর থাকা অবস্থায় গিলে ফেলা।
- নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না এরূপ মনে হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীকে চুম্বন করা ও আলিঙ্গন করা। আর রোজা অবস্থায় স্ত্রীর ঠোঁট মুখে নেয়া সর্বাবস্থায় মাকরূহ।
- নিজের মুখ দিয়ে চিবিয়ে কোন বস্তু শিশুর মুখে দেয়া। তবে অনন্যো
- কারণ ছাড়াই কিছু চিবুতে থাকলে রোজা মাকরুহ হবে।
- কোনও কিছু স্রেফ মুখে পুরে রাখলেন, খেলেন না তাতেও রোজা মাকরুহ হবে।
- গড়গড়া কুলি করা অথবা নাকে বেশি গভীরে পানি দেওয়া।
- মুখের লালা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পেটে গেলে ক্ষতি নেই, তবে ইচ্ছাকৃত দীর্ঘ সময় মুখে থুথু ধরে রেখে পরে গিলে ফেললে রোজা মাকরুহ হবে।
- রমজানের সারাটি দিন শরীর নাপাক রাখলেও রোজা মাকরুহ হবে।
- কোনও বিষয়ে অস্থির হয়ে উঠলে কিংবা কাতরতা দেখালে রোজা মাকরুহ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে কোনও কোনও ব্যাখ্যা।
- পাউডার, পেস্ট ও মাজন দিয়ে দাঁত পরিস্কার করলে রোজা মাকরুহ হয়ে যায়।
- মুখে গুল ব্যবহার মাকরুহ এবং থুথুর সঙ্গে গুল গলার ভেতর চলে গেলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
- রোজা রেখে কারো গিবত করলে বা পরনিন্দা করলে রোজা মাকরুহ হয়।
- মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ। রোজা রেখে এ কাজটি করলে তা মাকরুহ হবে।
- রোজা রেখে ঝগড়া-বিবাদ করলে রোজা মাকরুহ হবে।
- যৌন উদ্দিপক কিছু দেখা বা শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতেও রোজা মাকরুহ হয়।
- নাচ, গান, সিনেমা দেখা ও তাতে মজে থাকলে রোজা মাকরুহ হয়।
- রান্নার সময় রোজাদার কোনও কিছুর স্বাদ নিলে, লবন চেখে দেখলে, ঝাল পরীক্ষা করলে মাকরুহ হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজনে সেটা যদি করতেই হয়, তাহলে বৈধ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
- গোসল ফরজ হয়েছে, এমন অবস্থায় নাপাক থেকে সারাদিন অতিবাহিত করা।
- রোগী বা কোন পরীক্ষার জন্য শরীর দুর্বল হয়ে যায়, এমন পরিমাণ রক্ত দেওয়া।
- রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট-মাজন ব্যবহার করা মাকরুহ। কেননা তা কণ্ঠনালীতে প্রবেশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়।