ঈদুল আযহা মূলত আরবি বাক্যাংশ । এর অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’। এই উৎসবকে ঈদুজ্জোহাও বলা হয়। ত্যাগ ও উৎসর্গের ঈদ হলো ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। প্রতিবছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ইদুল আযহা পালন করা হয় ও ইদুল আজহার নামাজ পড়া হয়। এই পোস্টের মাধমে আজকে ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব ।
মুসলমানদের কাছে বছরে যে ২ টি দিন বিশেষ দিন এবং আনন্দের দিন তা হল ইদুল ফিতর ও ইদুল আযহা । প্রতিবছর এই ২ টি দিন প্রত্যেক মুসলমান বিশেষ আনন্দ এবং উৎসবের মধে দিয়ে কাটায় । আর বছরে এই ২ দিন দুইবার ঈদের নামাজ পড়তে হয়, ইদুল ফিতর ও ইদুল আজহার নামাজ।
ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম হল ইদুল আজহার নামাজ দুই রাকাত। ইদুল আজহার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব এবং ঈদুল আজহার নামাজ জামাআতে আদায় করা। যেহেতু শুধু মাত্র বছরে ২ দিনেই ইদের নামাজ পড়তে হয় তাই অনেকদিন অতিবাহিত হওয়ার কারণে অনেকেই ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম গুলো ভুলে যায়।
তাই সবার সুবিধার্থে ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম গুলো নিচে তুলে ধরা হল ঃ
অন্যান্য নামাজ এবং ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম এর মধ্যে পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ছয় তাকবির। এই নামাজে কোন আযান ও ইকামত নেই। তবে ঈদুল আজহার নামাজ এ রুকু, সিজদা, তাশাহুদ সব আছে। নিচে ঈদুল আযহার নামাজের বাংলা নিয়ত ও আরবী নিয়ত তুলে ধরা হলো।
আরবিতে ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম নিয়তঃ
نويت ان اصلي لله تعالي ركعتي صلاة العيد الاضحى مع ستة تكبيرات واجب الله تعالى اقتدیت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة اللهاکبر
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম বাংলা নিয়ত উচ্চারণঃ
নাওয়াইতু আন উছাল্লিায়ালিল্লাহি তা’আলা রাকাতাই সালাতি ঈদিল আদ্বহা মাআ সিত্তাতি তাকবিরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
কুরবানি বা ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম বাংলা নিয়তঃ
আল্লাহ তাআলার উদ্দেশে কিবলামুখী হয়ে ঈদুল আজহার ২ রাকাআত ওয়াজিব নামাজ ৬ তাকবিরের সাথে এই ইমামের পেছনে আদায় করছি ‘আল্লাহু আকবার’।
প্রথম রাকাত:
আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করছি বলে নিয়ত বাঁধতে হয়।
তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধবেন। ইমাম ও মুসল্লিরা নিয়ত বাঁধার পর ছানা পড়বে – ( আপনাদের সুবিধার্থে নিচে ছানা বাংলায় উচ্চারণ দেয়া হল )
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা ঝাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।
তারপর ইমামের উচ্চস্বরে তাকবির বলার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিরাও তাকবির বলবেন। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবির বলার সময় উভয় হাত কান বরাবর ওঠিয়ে ছেড়ে দিবেন।
তৃতীয় তাকবিরের সময় উভয় হাত কান বরাবর ওঠিয়ে না ছেড়ে হাত বাঁধবেন। এরপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা এবং অন্য সুরা মিলিয়ে রুকু, সিজদা করবেন; মুসল্লিরাও ইমামের সঙ্গ রুকু সিজদা করবেন।
দ্বিতীয় রাকাত:
ইমাম সাহেব দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা মিলানোর পর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে অতিরিক্ত তিন তাকবির প্রথম রাকাতের মতোই আদায় করবেন। এরপর রুকু-সিজদা করার পর অন্যান্য নামাজের মতোই সালাম ফিরানোর মাধ্যমে ।
ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম ও ইদুল ফিতরে নামজের নিয়ম একি ।
ঈদুল আজহার নামাজ শেষ করে ইমাম মিম্মারে উঠবেন। তারপর ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম অনুসারে তিনি দুই টি খুতবা পাঠ করবেন। এরপর খুতবা শেষ করে সবাই ঈদগাহ ত্যাগ করবেন। তবে ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম মতে সবার সাথে কোলাকুলি করা অতি উত্তম।
ঈদুল ফিতরের নামাজ এবং ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে আদায় করা।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنْحَرْ (ফাসালিল লিরাব্বিকা ওয়ানহার)।
অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানী করুন। (সুরা আল কাউছার)
ইদুল আযহার দিনের বিশেষ সুন্নাত সমুহ ঃ
১। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা
২।গোসল করা
৩। মিসওয়াক করা
৪। সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন পোশাক পড়া
৫। আতর ব্যাবহার করা
৬। মহল্লার মজিদে গিয়ে জমাতের সাথে ফজোরের নামাজ আদয় করা
৭। ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া
৮। এদুল আজহার দিন কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া
৯। নিম্মোক্তো দোয়া পোরে ঈদগাহে যাওয়া :
আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওলিল্লাহিল হামদ ।
আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম মেনে নামাজ পরার তৌফিক দিন এবং ধর্মীয় কাজে জীবন উৎসর্গ করার তৌফিক দিন। আমিন।
জাযাকাল্লাহ খাইরান
Alhamdulillah onek kichu janlam
Thank You