Marketer Rashed

ফ্রিল্যান্সিং কি? নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং পূর্ণ-গাইডলাইন

ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর অর্থ হলো স্বাধীন বা মুক্তপেশা। অন্যভাবে বলা যায়, নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করা কে ফ্রিল্যান্সিং বলে। ফলে মুক্ত পেশাজীবীরা ঘরে বসেই তাদের কাজ করে উপার্জন করতে পারেন।

২০২২ সালে এসে ফ্রিল্যান্সিং এখন গরিবের আকাশ ছোয়া স্বপ্ন পূরণ করা ক্যারিয়ারের নাম হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। শুধু গরিব বললে ভুল হবে, বর্তমানে অনেক বি সি এস পাস করা লোকজনও ফ্রিল্যান্সিং করছে। সরকারি বেসরকারি হাজারো ভালো ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি দেয়া যাবে।

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরটিতে যোগ্য লোকদের চাহিদা অনেক বেশি হয়ে থাকে। যারা কাজ পড়ার সাথে সাথে ইংলিশ এ ভালো তারা প্রতি মাসে কয়েক লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করতে পারে ফ্রিল্যান্সিং করে। মাত্র কয়েক বছরের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে রীতিমত কোটিপতি হয়ে গেছে এমন ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যাও কম নয়। টাকার অঙ্ক শুনে বিষয়গুলো আপনার কাছে একটু বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ফ্রিল্যান্সিং এবং এক মুক্ত খনির নাম যেখানে যে একবার পৌঁছাতে পারে তার কাছে কোটি টাকা কয়েক হাজার টাকার মতো মনে হয়।

এখন আপনার মনে স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন জাগতে পারে যে কোটি টাকা কেন হাজার টাকার মতো মনে হবে? তাই না?

একজন ফ্রীলান্সার যখন কাজ করে তখন সে USD ডলারে পেমেন্ট পায়, স্বাভাবিকভাবে এই পেমেন্ট অনেক কম মনে হয় কিন্তু এটা যখন BDT মানে বাংলা টাকায় কনভার্ট করা হয় তখন just BOOM! তাই কখন যে আপনিও এত্ত টাকা ইনকাম করে ফেলেছেন তা বুঝেও উঠতে পারবেনা।

কিন্তু এত কিছুর পরেও সবাই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেনা বা এই সেক্টরে সফল হতে পারেনা। কিছুদিন চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় হাল ছেড়ে দিয়ে ঝরে পড়ে ফ্রিল্যান্সিং নামক স্বপ্নের দুনিয়া থেকে।

কেন এমনটা হয় আর কি করিলে আপনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন সে বিষয়েই আজকে পরিপূর্ণ গাইডলাইন দেব ইনশাআল্লাহ! আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনার উপকারে আসবে ইনশাআল্লাহ!

ফ্রিল্যান্সিং কি ? (Freelancing ki)

ফ্রিল্যান্সিং হলো বাধাহীন ভাবে নিজের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় থেকে অন্য কারো আদেশ ব্যতীত সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছেতে করা কোনো কাজ। একটু কঠিন হয়ে গেল? তো চলুন ফ্রিল্যান্সিং কে আরো সহজ করে শিখে নেই-

সহজ ভাবে বললে বলা যায় যে, কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের চাকরি না করে সম্পুর্ন্ন নিজের ইচ্ছেমতো কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে অন্য কোন দেশী বা বিদেশী কোম্পানী বা বেক্তিকে কোনো সেবা প্রদান করে তার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করাই ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশা। আসলে ফ্রিল্যান্সিংকে আরো অনেক ভাবেই সংজ্ঞায়িত করা যায়।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ গুলো সাধারণত এক দেশ থেকে অন্য দেশের ক্লায়েন্টের জন্য করা হয়। যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করেন তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার। বেশিরভাগ ফ্রীলান্সাররা তাদের নিজেদের ঘরে বসেই তাদের কাজ গুলো করছেন এবং যখন খুশি তখন কাজে সময় দিচ্ছেন। এ জন্যই মূলত ফ্রিল্যান্সিংকে মুক্ত পেশা বলা হয়ে থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং এর ইতিহাস

মূলত অর্থের বিনিময়ে কাজ করা যোদ্ধাদের থেকে ফ্রিল্যান্সারদের উৎপত্তি। ১৮১৯ সালে প্রথম ফ্রিল্যান্সার শব্দ ছাপা হয় “Walter Scott” নামক এক লেখকের বইতে। সুত্রঃ উইকিপিডিয়া

ফ্রিল্যান্স শব্দটি 1819 সালে স্যার ওয়াল্টার স্কট দ্বারা ইভানহোতে জনপ্রিয় হয়েছিল। যদিও ওইটা ছিল অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য প্রযোজ্য।

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর ইতিহাস খুব বেশি পুরানো নয়। বাংলাদেশও গত কয়েক  বছরে এই পেশা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে ফ্রিল্যান্সিং-এর ধারণাটি আগে থেকেই ছিল। এর সুচনা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে গুরুডটকম  নামের একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস দিয়ে। GURU সর্বপ্রথম ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যা ১৯৯৮ সালে SOFTmoonlighter.com হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতায় পরে Elance.com, RentAcoder.com, Odesk.com, GetAFreelancer.com, Freelancer.com, Limeexchange.com সহ আরো অনেক মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠিত হয়। Elance.com এবং Odesk.com মিলে পরবর্তীতে ২০১৫ সালের মে মাসের দিকে বর্তমান সময়ের সবথেকে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আপওয়ার্ক এর জন্ম হয়।

এর কিছুদিন পরে Fiverr.com, PeoplePerHour, PeoplePerHour, Toptal.com সহ আরো বেস কিছু পপুলার ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের জন্ম হয়। বর্তমানে রয়েছে কয়েক হাজার মার্কেটপ্লেস। এর মাঝে কিছু লোকাল কিছু ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস।

ইন্টারনেটের বিস্তৃতির কারনে বাংলাদেশেও ফ্রিল্যান্সিং দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এবং গুঁটি কয়েক লোকাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের জন্ম হয়েছে।

ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন এর পেছনে অনেকগুলো রিজোন থাকতে পারে। যেমন ধরুন কাজের স্বাধীনতা। আপনি যদি নিজের ইচ্ছে মতো কোনো কাজ করতে চান, নিজেই যদি নিজের কাজের বস হতে চান অথবা নিজের ইচ্ছে মতো কাজ বাছাই করতে চান ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার বেস্ট অপশন।

আবার ধরুন আপনি অনেক টাকা পয়সার মালিক হতে চান। আর আমরা আগেই বলেছি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে খুব কম সময়ে কোটিপতি হওয়া সম্ভব। এখন আপনি যদি কম সময়ের ভিতরে হালাল উপায়ে অনেক টাকা পয়সার মালিক হতে চান তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য একটি ভালো পছন্দ হতে পারে।

অথবা আপনার যদি কম্পিউটারে বসে কাজ করতে ভালো লেগে থাকে বা ভিন্ন ভিন্ন দেশের মানুষের সাথে কাজ করার ইচ্ছে থাকে তাহলেও ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করলে আপনি আস্তে আস্তে বিশ্বের নানা দেশের নানা ধরণের মানুষের সাথে পরিচিত হবেন। এখানে ফ্রিল্যান্সিং কাজের এর কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা বলে দিচ্ছি যেনো আপনার সিদ্ধান্ত নিতে এবং বুজতে সহজ হয়।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের এর কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা
Freelancing Pros and Cons
সুবিধা:অসুবিধা:
ফ্লেক্সিবিলিটি: নিজের সময় ও চাহিদা মত আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন। ঘরে বসে কাজ করা যায়।কাজের কোন নিরাপত্তা বা গ্যারান্টি নাও হতে পারে। কোনো কোনো সময় এমন হবে, আপনি সারা মাসেও একটি কাজও পাবেন না।
ইংরেজি ভাষার উন্নতি হয়।ফ্রিল্যান্সিং এ কাজের প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়েই চলছে।
কাজের কোনো লিমিট নেই। যত বেশি কাজ তত বেশি টাকা।অনেকে ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করতে পারে না।
ফ্রিল্যান্সিং এ আপনি বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেশনাল ক্লায়েন্ট এর সাথে কাজ করবেন।অনিশ্চিত আয়: কিছু কিছু সময় ফ্রিল্যান্সিং আয় অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং করার সাথে সাথে আপনি টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখবেন যেটি আপনার  পার্সোনাল লাইফেও কাজে লাগবে।অসুস্থ হয়ে যাবার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
কোন বাধ্যবাধকতা ছাড়াই আপনি কাজ থেকে ছুটি নিতে পারেন।মানুষ ফ্রিল্যান্সিং বুঝে না বিধায় ফ্রিল্যান্সিংকে সম্মানজনক জব হিসেবে মনে করে না।
বেশি পরিশ্রম, কম টাকার কাজ আপনি ইচ্ছেমতো বাতিল করে কাজের চাপ কমাতে পারেন।ফ্রিল্যান্সিং ট্যাক্স প্রদান করা ও প্রসেস করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পরে।
কম সময় ব্যয় করে বেশি টাকা আয় করা সম্ভব হয়।সবসময় নির্দিষ্ট টাকা রোজগার ফ্রিল্যান্সিং এ সহজ নয়।
ভালো ভালো কাজ করে আপনি সুনাম এর সাথে সাথে প্রচুর অর্থও রোজগার করতে পারেন।বাড়িতে সবসময় নিজের সময়মত কাজ করার সুবিধা থাকে না।
নতুন নতুন মানুষদের সম্পর্কে জানা যায়।একঘেয়েমি: কাজ করতে করতে আপনি নিজেকে একসময় একা ফিল করতে পারেন।
Freelancing Pros and Cons

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবো?

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথমে কাজ শিখতে হবে। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এমন অনেক কাজ আছে। এর ভিতরে বর্তমানে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় কিছু কাজের লিস্ট দেয়া হলো।

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ:

  1. ডিজাইনিং
  2. আর্টিকেল রাইটিং
  3. ডিজিটাল মার্কেটিং
  4. ডাটা এট্রি
  5. আইটি ও নেটওয়ার্কিং
  6. কাস্টমার সার্ভিস
  7. সেলস এবং মার্কেটিং
  8. ভারচুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স
  9. প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট
  10. ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি।

এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। আপনার যেই কাজটি সব থেকে বেশি ভালো লাগে আপনি সেটি দিয়েই শুরু করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন যেটি দিয়েই শুরু করেন না কেন প্রথমে ঐকাজটিকে খুব ভালোভাবে শিখতে হবে।

ধরুন আপনি মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট খুলেই কাজ খোঁজা শুরু করলেন অথচ আপনি কোনো স্কিলই আয়ত্ত করতে পারেননি। সেক্ষেত্রে আপনার অবস্থা কি হবে একবার ভেবে দেখেছেন?

কেউ আপনাকে ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর একটি প্রোজেক্ট ধরিয়ে দিয়ে বললো কতদিন লাগবে বলুন। আপনার জ্ঞান না থাকায় আপনিও বললেন ২ বছর। অথচ একটা ওয়েবসাইট ডেভলপ করতে এত সময় কখনোই লাগে না। আপনি শুরুতেই খেয়ে গেলেন ধরা। এরকমই আরো অনেক সমস্যার মুখে পড়বেন যদি না নিজেকে শুধরে নেন। প্রথমেই টাকা নয় বরং ছুটুন স্কিল এর পিছনে। দেখবেন টাকা আপনার পিছনে ছুটছে।

ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি

তুলনামূলকভাবে বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও, ওয়েবসাইট ডিজাইন,  গ্রাফিক্স ডিজাইন, আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি কাজ গুলোর চাহিদা বেশি।

কোনো কাজেই সহজ নয় আবার খুব কঠিন নয়। তবে বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখাটা অনেকটা জরুরী হয়ে পড়েছে। কেননা ডিজিটাল মার্কেটিং না শিখলে আপনি আপনার নিজের স্কিলটিকেই বিক্রি করতে পারবেননা। তাই যে কাজেই করেননা কেন ডিজিটাল মার্কেটিং মাস্ট লাগবেই।

ফ্রিল্যান্সিং জগতে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটির প্রয়োজন তা হলো আপনি কোনো একটি বিষয়ে নিজেকে পারদর্শী করে তুলতে হবে। কেননা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে যে হাজার হাজার কাজ রয়েছে তার সবগুলো একসাথেই শেখা সম্ভব নয়। আর আপনি একইসাথে একাধিক কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন না।

ফ্রিল্যান্সিং কাজের বৈশিষ্ট্য:

ফ্রিল্যান্সিং কাজের সবথেকে মজার বৈশিষ্ট্য হলো ফ্লেক্সিবিলিটি- মানে এখানে রয়েছে আনলিমিটেড সুযুগ সুবিধা। আপনি চাইলে আপনার বাসায় বসেই কাজ করতে পারবেন, চাইলে বাসার ছাদে বসে কাজ করতে পারবেন। আবার চাইলে সুবুজ মাঠে বা নদীর ঘাটে বসেও এই কাজ করতে পারবেন। মানে হচ্ছে যেখানে খুশি সেখানে বসেই ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করা যায়।

আপনার কাজের পারিশ্রমিক আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন। যার কাজ ভালো লাগে তার কাজ করতে পারবেন, যার কাজ ভালো না লাগে তার কাজ জোর করে করার কোনো প্রয়োজন হবেনা। চাইলে একসাথে অনেক জনের কাজ করতে পারবেন কেউ আপনাকে বাধা দিবেনা। এগুলোকে আমরা বলে থাকি ক্লায়েন্ট প্রজেক্টস। ফ্রিল্যান্সিং কাজের এমন আরো হাজারো বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

ফ্রিল্যান্সিং করে কত আয় করা যায়

ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায় এই বিষয়টি আসলে ওই ভাবে নির্দিষ্ট করে বলতে পারার মতো নয়। আমার আগেই বলেছি বিভিন্ন ধরনের কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। একেক ধরণের কাজের মূল্য একেক ধরণের হয়ে থাকে।

ধরুন কেউ একজন আর্টিকেল রাইটিং নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে। অপরদিকে অন্য একজন যিনি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে। তাহলে তুলুনামূলক ভাবেই যিনি ইঞ্জেনিয়ার তিনি আর্টিকেল রাইটার এর থেকে কয়েকগুণ বেশি টাকা ইনকাম করে থাকেন।

কোন ফ্রিল্যান্সার আপনাকে এক্সাক্ট ভ্যালু বলবে না।  তবে আপনি কাজ জানলে এবং ধৈর্য্য ধরতে পারলে 1লাখ আশা করতে পারেন। এটা শুধু এক্সপার্ট লেভেল এর জন্য বললাম। যারা এর চেয়ে বেশিও করতে পারে।

টাকা উপার্জনের Lower Limit আছে কিন্তু কোন Upper Limit নাই। ফ্রিল্যান্সিং করে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ মানুষজন লক্ষ লক্ষ টাকা কামাচ্ছে এটা যেমন সত্যি তেমনি অনেকে এক ডলারও কামাতে পারছেনা, এটাও সত্যি। আপনার পেশাগত এবং যোগাযোগের দক্ষতা এখানে খুবই বড় একটা ফ্যাক্টর।

আমি মাসে এত লক্ষ টাকা উপার্জন করছি, এটা কেউই এসে আপনাকে বলবেনা। যারা একা কাজ করে, তাদের ইনকামের পরিমাণ নির্ভর করে কত সময় কাজ করতে পেরেছে তার উপর। অনেকে দলগত কাজ করে, তাদের ইনকামও বেশী হয়ে থাকে।

প্রতিটা কাজেই শুরুতে বেতন বা আয় কম থাকে। আস্তে আস্তে যত দিন যায়, তত অভিজ্ঞতা বাড়ে এবং আয়ের পরিমাণও বাড়ে। ফ্রিল্যান্সিং টাও এমন। শুরুতে অনেক স্ট্রাগল করতে হয়। শুরুর দিকে আয়ের পরিমাণ কম থাকে। অভিজ্ঞতা হলে তখন কাজের পরিমাণ বাড়ে এবং সেই সাথে আয়ের পরিমাণও বাড়ে।

শুরুতে আপনি হয়ত মাসে ১০০$ – ১৫০$ পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। আস্তে আস্তে এর পরিমাণ বাড়বে। আপনি কতটুকু সময় দিলেন তার উপর আপনার আয় নির্ভর করবে। সময় দিলে মাসে ৭০-৮০ হাজার অনায়াসে পাওয়া যায়। অনেকেই এমন আছেন যারা অন্য পেশায় ছিলেন এবং এখন আগের চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় চলে এসেছেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, আগের চেয়ে বেশি আয় করতে পারে বলেই তারা এ পেশায় আসছেন।

ফ্রিল্যান্সিং করে যদি এত টাকা ইনকাম করা যায় তাহলে দেশে এত বেকার কেন?

প্রায় আরো বছর খানেক আগে আমি আমার LinkedIn প্রোফাইলে এই বিষয়টি নিয়ে পোস্ট করেছিলাম। এবং এর এক কথায় সংক্ষিপ্ত উত্তরও দিয়েছিলাম। সেই পোস্টি প্রায় সাত হাজার মানুষ দেখেছিলো এবং নানা ধরনের যুক্তিসংগত মন্তব্য করেছিল।

Freelancing Post
Freelancing Post

ফ্রিল্যান্সিং করে যদি এত টাকা ইনকাম করা যায়>তাহলে দেশে এত মেধাবী ছাত্র/ছাত্রী বেকার কেন? ৫লাখ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বেকার কেন? আরও লাখ লাখ শিক্ষার্থীরা বেকার কেন? তারা কি ফ্রিল্যান্সিং করতে জানে না?

উত্তর:- ফ্রিল্যান্সিং লাইনে সবাই টিকে থাকতে পারেনা, এর জন্য অনেক ধৈর্য ও পরিশ্রম প্রয়োজন হয়।

চলুন দেখি ফ্রিল্যান্সিং এর এই বিষয়টি নিয়ে সোনিয়া আক্তার আপু কি বলে

“ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা যায়!” কথাটা শুনতে খুব ভাল লাগে, তাই না? কিন্তু, তাহলে সবাই কেন লাখ লাখ টাকা রোজগার করতে পারে না? চলুন, বিষয়টির একটু গভীর থেকে ঘুরে আসি।

প্রথমত, আমাদের একটি সমস্যা আছে। তবে ঠিক সমস্যা বলব কিনা জানিনা, ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা খুব শর্টকাট রাস্তাতে বড় হতে চাই।

দ্বিতীয়ত, আমরা কোন কিছু ভালোভাবে না বুঝে শুনেই সে বিষয়টা সফলতা নিয়ে খুব বেশি মাতামাতি করি।

তৃতীয়ত, আমাদের ধৈর্য্য খুবই কম। আর আমরা কোন কিছুর প্রতি লেগে থাকার মত মানসিকতা নিয়ে কাজ করি না। আজ করব, তো কাল সফল হব— এটাই যেন আমাদের চিন্তাভাবনা।

চতুর্থত, আমরা কখনোই দক্ষ জনগোষ্ঠীতে রূপান্তর হতে চেষ্টা করি না। আমরা তথাকথিত জিপিএ ফাইভ ব্যাপারটাতেই খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। অবশ্য এখানে আমাদের চাইতে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, আমাদের বাবা-মার ধ্যান-ধারণা, প্রতিবেশীদের অমুকের ছেলে ভালো করেছে তোমার ছেলে কেন করেনি? এই ব্যাপারটাই বেশি কাজ করে।

পঞ্চমত, আমরা কখনোই কোনো দক্ষতা অর্জন করার জন্য খরচ করতে চাই না। আমরা শুধু খরচ করতে পছন্দ করি জিপিএ-5 পাওয়ার জন্য, সকাল থেকে সন্ধ্যা শুধু জিপিএ-5।

ষষ্ঠত, জীবনের যে বয়সে আমরা দক্ষতা অর্জন করব সে বয়সটা পার হয়ে যায় জিপিএ-5 পাওয়ার পেছনে। আর যখন পরিবার-পরিজনদের দায়িত্ব নেওয়ার সময় আসে তখন বুঝি দক্ষতা আমার এখনো তৈরি হয়নি। তাই তথাকথিত চাকরির পেছনে ছুটি আর হতাশ হই।

সপ্তমত, আমাদের সঠিক পথ দেখাবার মানুষের বড়ই অভাব। আমাদেরকে ছোটবেলা থেকেই মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় পড়াশোনা করো, জিপিএ-5 পাও, আর ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার অথবা বিসিএস ক্যাডার হও , তা না হলে জীবনটা তো ষোল আনাই মিছে!

অষ্টমত, ইংরেজির নাম শুনলে তো আমাদের গায়ে জ্বর চলে আসে। সতেরো -আঠারো বছর পড়ালেখা জীবন শেষ করেও দুটো ইংরেজি কথা বলা অথবা দুটো ইংরেজি শব্দ সুন্দরভাবে গুছিয়ে লেখা আমাদের দ্বারা হয় না। কিন্তু ইংরেজ একটি ভাষা ছাড়া আর কিছুই নয়। শুধুমাত্র এক বছর কেউ যদি প্রাণপণ লেগে থাকে, তবে ইংরেজদের চেয়ে কোন অংশে খারাপ ইংরেজি ভাষায় সে কথা বলবে না।

আমি তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। হিসাববিজ্ঞানে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করার পরেও শুধুমাত্র নিজের চেষ্টায় খুব ভালো না হলেও মোটামুটি ইংরেজিতে কথা বলা বা যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার মত দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছি। এ কারণে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মত কঠিন পেশায় নিজের একটি অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।

এগুলোই মোটামুটি কারণ, এছাড়া আরো অনেক কারণ রয়েছে যে কারণে আমরা ফ্রিল্যান্সিং পেশায় টাকা রোজগার করতে পারার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দেশে বেকারের অভাব নেই। আমরা কখনোই ফ্রিল্যান্সিং-এর মত কঠিন পেশায় দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের পাশে নিজেদের অস্তিত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারি না। তখন ৯টা-৫টা চাকরি, ১৫-২০ হাজার টাকা বেতন, মধ্যবিত্ত জীবন যাপন, এটাই আমাদের জীবনের প্রতিদিনকার রুটিন হয়ে দাঁড়ায়।

চলুন ফ্রিল্যান্সিং এর এই বিষয়টি নিয়ে মামুনুর রশিদ ভাই কি যুক্তি দিয়েছে দেখি

ডাক্তারি করে অনেক টাকা তবে কেন সবাই ডাক্তারি করেনা? বলতে গেলে করতে পারে না।

চমৎকার প্রশ্নটির উত্তর দিতে প্রয়াসী হচ্ছি।

ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। চোখ নেই মোটে যার নাম তার পদ্মলোচন। যে দেশে এমন সর্দার আর পদ্মলোচনের কদর বেশী সেখানে তো তাই পাওয়া যাবে। বেকার সমস্যা একটি বৈশ্বিক বিষয়। শুধু আমাদের দেশ বলে নয়, উন্নয়নশীল, দরিদ্র, এমনকি উন্নত দেশেও এ সমস্যা বিদ্যমান।

যদি পরিসংখ্যান দেখেন- খুঁজে পাবেন কত শত লোক নিউয়র্কের রাস্তার পাশে ফুটপাথ, পার্ক ও কমিউনিটি প্লেসে তাঁবু খাটিয়ে বা খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়ে থাকে। তাই, নিজের দেশ মাতৃকা বা আমার বেকার ভাইবোনদের কে এ সমস্যার জন্য আমি দায়ী করতে যাব না।

প্রশ্নটির দুটি অংশ আমি আলাদাভাবে বিবেচনা করতে চাই। এক- ফ্রিলান্সিং থেকে যদি এত আয় হয় । আর দুই- এত বেকার কেন?

ফ্রিল্যান্সিং করে কি সত্যিই আয় করা যায়?

প্রথম অংশ- ফ্রিলান্সিং থেকে আয় হয় কিনা তা যাচাই করা দরকার। আপনি সন্দিহান যে আসলে ফ্রিলান্সিং বলতে কিছু আছে কিনা, বা থাকলে কি তাতে আদৌ কোন আয় হয়? এই যাচাইকরনের জন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক এর রেমিটেন্স এর গ্রাফ দেখতে চাই। নিচের গ্রাফের তথ্যসূত্র Bangladesh Remittances | 2012-2020 Data | 2021-2022 Forecast | Historical | Chart

বাংলাদেশ ব্যাংক এর রেমিটেন্স এর গ্রাফ

বিদেশি টাকা দেশে প্রবেশ করার প্রধান দুটি মাধ্যম শ্রম ও রপ্তানি। কোভিড এর সময় রপ্তানি শূন্য। বিদেশি শ্রমজীবী বাংলাদেশীরাও লকডাউনে থাকছেন। ফলে এই যে টাকার আগমন তা এদেশি ঘরে বসে কাজ করা মানুষের শ্রমের মূল্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

এবার আসা যাক মাথাপিছু আয়ের কথায়, এখান থেকে দেখে নিতে পারেন বাংলাদেশী ফ্রিলান্সারদের সূদীর্ঘ তালিকা The Best Freelancers For Hire In Bangladesh – Upwork™

তাহলে বুঝা গেল যে ফ্রিলান্সিং থেকে আয় করার বিষয়টি বাস্তবানুগ।

এখানে কিছু গুজব থাকতে পারে। তবুও এটা একটা দারুণ জায়গা নিজেকে দাড় করানোর জন্য।

দ্বিতীয় অংশ- এত বেকার কেন? বেকার দূরীকরণের হাতিয়ার হিসেবে ফ্রিলান্সিং একমাত্র উপায় নয়। আবার যতটা সহজ শুনতে ততটা সহজও নয়। আমাদের দেশে বেকার তৈরির কিছুটা ইতিহাস তুলে ধরতে চাই। বেকার কাকে বলে? যে কোন কাজ করার মত উপায় পাচ্ছে না তাকে বেকার বলে। যিনি কাজ করার উপায় থাকার পরও তা করেন না- তিনি বেকার নন, তিনি অলস।

ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ পুর্ব প্রধান পেশা ছিল কৃষিকাজ ও ব্যবসায়। মুসলিম বনিকগণ তা পরিচালনা করতেন। হিন্দু পঞ্চায়েতে বেদ পড়ানো হত। আর মুসলিম সুফিদের কাছে গিয়ে ইসলামী শিক্ষা অর্জন করতেন অনেকে। জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা এই ধর্ম কেন্দ্রিক ছিল।

ব্রিটিশ এসে তৈরি করল সাধারণ শিক্ষা ও ধর্মীয় শিক্ষার বিভাজন। মুসলিম পণ্ডিতেরা নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখলেন ইংরেজি শিক্ষার পরিবেশে যুক্ত হবার থেকে। ফতোয়া জারি করলেন ইংরেজি শিক্ষা করা হারাম। কওমি মাদ্রাসা চালু করলেন। ইংরেজি শিক্ষিত লোকের অপ্রতুলতার জন্য শিক্ষিত লোকদের কদর খুব বেড়ে যায়। হিন্দুদের ভেতরে ইংরজি শিক্ষার প্রসার বাড়তে থাকে।

তারা ব্রিটিশ বেনিয়াদের হুকুমাতের বিভিন্ন পদে আসীন হতে থাকেন। ইংরেজরাও বুঝাতে সক্ষম হন কৃষিকাজ করা ছোটলোকি। ব্যবসায় করা যদিও টাকার দিক দিয়ে সুবিধাজনক তবুও তা অশিক্ষিতের কাজ। তুমি শিক্ষা গ্রহণ করেছ তো বড় একটা চাকুরী নিয়ে বস। মাস গেলে মাইনে পাবে, মানুষ তোমাকে সমীহ করবে, স্যার বলে সম্বোধন করবে। আমরা এতে খুব সন্তুষ্ট হলাম।

আর চাকুরীকে আমাদের সম্মানের উৎস হিসেবে বিবেচনা করতে থাকলাম। এখনও ব্রিটিশদের সে মনোভাব বিদ্যমান আছে। সেনাবাহিনীর কোন অফিসারের সাথে যদি আপনার আলাপ হয় তাকে একটু জিজ্ঞেস করবেন প্রজাতন্ত্রের মানুষদেরকে তারা কি বলে ডাকে। আমার জানামতে তারা Bloody Civilian বলে। দেখে নিতে পারেন এখানে Urban Dictionary: Bloody Civilian পাকিস্তান আমল গেল, বাংলাদেশ আমল আসল।

প্রজন্মের বর্ধিত জনসংখ্যা ও শিক্ষার উচ্চ হার বিপরীতে সরকারী চাকুরীর তুলনামূলক কম প্রসারণশীল ক্ষেত্র একটি অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করলে। যা শুরুর দিকে মৃদু সমীরণ মনে হলেও পরিণত হয় সাইক্লোনে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জন্মনিয়ন্ত্রন, জন্মনিরোধ, গর্ভপাত নানান টোটকা বাজারে আসতে থাকে। ফলাফল অনেকটা ভালোই পাওয়া গেল। আগে দম্পতিরা ৯ থেকে ১০ টি সন্তান সহজেই পেতেন। এখন দম্পতিপিছু ২ বা ৩ এ নেমে এসেছে।

পুত্র সন্তানের ওভাবে এ সংখ্যা কোথাও আরও একটু বেশী দেখা যায়। সিজার নামক অস্ত্রপাচারও কিছুটা অবদান রেখেছে। তাতে কি? চিকিৎসা ব্যাবস্থা উন্নতির ফলে মৃত্যু হার কমে গেল। গড় আয়ু বেড়ে গেল। গ্রাফটি দেখুন। সূত্র Life expectancy at birth, total (years) – Bangladesh

গ্রাফ

এই অসম প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় স্বাধীনতা পরবর্তি সরকার সচেষ্ট হল শ্রম রপ্তানিতে। সুফলও পাওয়া গেল। দেশের জমির দাম বহুগুণ বৃদ্ধি পেল। ঢাকা শহর একটি সাধারণ শহর থেকে তিলোত্তমা মেগাসিটিতে রূপান্তরিত হল মাত্র কয়েক দশকে। আগে যেখানে মানুষ খাবারের জন্য সরকারী রেশনকার্ডের উপর আংশিক নির্ভর ছিল।

সেই দেশ খাবারে স্বয়ং সম্পুর্ন হয়ে গেল। ছনের ঘর, কুড়ে ঘর, রাতারাতি টিনের ঘর, আধা পাকা দালান হল। বরং চাকুরীজীবী বা মাইনেজীবীরা পড়ে গেলেন গ্যাঁড়াকলে। পণ্যদ্রব্যের দাম ও মান বৃদ্ধি পেয়ে তা আকাশচুম্বী হল। নিজেদের মান আর বউ বাচ্চার আবদার রাখতে যেয়ে সেই অফিসার শ্রেণী রাজকোষের টাকা মেরে খাওয়া শুরু করে। ঘুস খাওয়া ওপেন সিক্রেট ফ্যাশনে রূপান্তরিত হয়। অনেকে ঘুস খাওয়ার স্পট পেতে ইন-সার্ভিস ঘুস দিতে বাধ্য হন।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানো শুরু হয়। সারা দেশে তারবাহী ও বেতার উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেয়া হয়। বিভিন্ন প্রজেক্ট ও উৎসাহ বর্ধক প্রচারণা শুরু হয়। দেশের একটা বিরাট অংশ সার্থকভাবে যুক্ত হয় আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের সাথে।

ফ্রিলান্সিং কোন ত্রাণ তহবিলের অর্থ নয় যে মাথাপিছু হিসেবে সবাই পাবে

এখানে তুমুল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুধু প্রকৃত পারঙ্গম ব্যক্তিরাই কাজ করতে পারেন। এখানে সার্টিফিকেটের বিশেষ কোন মূল্য নেই। মূল্যহীন মামু খালুর ফোন। ধর্ম বর্ন লিঙ্গ কোন বৈষম্যই এখানে কাজ করে না। একটি অবারিত সমুদ্রের কুলু কুলু গর্জন যেন অন্তর্জাল থেকে ভেসে আসে। সে শব্দের দ্যোতনায় ব্যকুল হয়ে ওঠে সৃষ্টিশীল মনন।

ছিঁড়ে যায় সময় কাল পাত্রভেদে চাকুরীর কৌলীন্যের ফানুস। জন্ম হয় একজন আন্তর্জাতিক মানের মানব। দিগ্ধিজয়ী স্বয়ম্ভু। তিনি হন ফ্রিলান্সার। তার সামনে পড়ে থাকে জ্ঞানের পাথার। কাজের নীলিমা। এক অফুরন্ত প্রাণবায়ু নিয়ে ছুটে চলা দেশের লাল সবুজের পতাকা নিয়ে।

বেকারত্ব ঘুচানোর জন্য ফ্রিলান্সিং একটি উপায়- সত্য। তবে এটাই একমাত্র উপায় যেমন নয়। তেমনই সবাইকে ফ্রিলান্সিং করে আয় করার মত উপযুক্ত করে তোলাও খুবই চ্যালেঞ্জ। ছাত্রদের শিক্ষার উদ্দেশ্য ছিল সার্টিফিকেট অর্জন, তারপর চাকুরী, তারপর সারাজীবন কুলীন হয়ে রাষ্ট্রের ঘাড়ে বসে খাওয়া। আর এখন স্কুলের বাচ্চারাও কাজ শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করে। সবেমাত্র সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত আমার পুত্র সন্তান এখন থেকেই স্কুলের পাঠের পাশাপাশী আমার কাছে থাকা কম্পিউটারে কাজ শেখে।

বাসার মধ্যেই অফিস- সেখানে বসে বিনোদন, আড্ডা, আয়ের জন্য কাজ শেখা। এই প্রজন্ম বেকার হয়ে বসে থাকবেনা। তবে সবাইকে সমান সুযোগ করে দেয়া কারো পক্ষে সম্ভব নয়। আমার দেশ মাতৃকা অথবা পরিবার সবারই সাধ রয়েছে। সাধ্য কোথায়!

ফ্রিল্যান্সিং থেকে সবাই ই আয় করতে চায় কিন্তু আয় করতে হলে প্রয়োজন নিয়মিত, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা এবং চর্চা ও প্রশিক্ষণের পেছনে সময় দেওয়া ৷ কিন্তু এই জায়গাটায় আমরা সবাই ঝরে পড়ে যাই ৷ কোনভাবেই ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে পারিনা ৷ তাই আমরা একটু সফল না হলেই হাল ছেড়ে দেই৷ যার কারনে ব্যাকারত্ব কখনোই আমাদের কাছ থেকে দূর হয় না ৷ 

আর যারা নিয়মিত ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে পেরেছে তারাই সফল হয়েছে , লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করেছে ৷ গাড়ি – বাড়ি তৈরি করেছে!

ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট কিভাবে খুলবেন

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য বর্তমানে কয়েক হাজার ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস রয়েছে। প্রতিটা মার্কেটপ্লেস রয়েছে একাউন্ট খোলার জন্য আলাদা আলাদা ধরন। তবে বেশিরভাগ মার্কেটপ্লেসেই ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট করার প্রসেস প্রায় ৮০% সেইম। যেকোনো একটি মার্কেটপ্লেস সঠিকভাবে একাউন্ট করা শিখতে পারলে আপনি তাহলে অন্য সকল মার্কেটপ্লেসেই একাউন্ট খুলতে পারবেন ইনশাআল্লাহ!

নিচের ভিডিওতে বর্তমান সময়ের সর্বাধিক জন্যপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ফাইবার নিয়ে দেখানো হয়েছে। এটা একটা লাইভ ক্লাসের ভিডিও। সম্পূর্ণ ভিডিওটি মনোযোগসহকারে দেখতে পারলে আপনি ফাইবার সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ!

আগেই বলা হয়েছে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল হবার মূলমন্ত্র হলো ধৈর্য্য। সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখার ধৈর্য্য হবে কি আপনার? তাহলে আপনি সফল হবেন কিনা নিজেই নিজেকে বুজতে পারবেন আশা করছি। সম্পূর্ণ  ভিডিওটি মনোযোগ সহকারে দেখুন- https://youtu.be/19-1SHUDCls

এ ছাড়াও ফাইবার নিয়ে আমার চ্যানেলে আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও আছে যেগুলো আপনার দেখে আসা প্রয়োজন। ভিডিওগুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন> Fiverr Playlist

নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং টিপস:

১০ টি ধাপ অনুসরণ করে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফল করুন-

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য:

অনেকেই জানতে চান ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য কি? আসলে ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এমন দুটি শব্দ যা প্রায়শই একই অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। তবে এই দুটি শব্দের অর্থ এবং কাজের দিক থেকে দুটি বিপরীত অবস্থান রয়েছে। যেহেতু এখনকার সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং দুটোই অর্থ উপার্জনের দুটো জনপ্রিয় পন্থা তাই এ দুই বিষয়ে সকলের সঠিক ধারণা থাকা উচিত।

অনেকে এই দুটি শব্দ একটিকে অপরটির প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহার করেন কারণ তারা এই দুটি শব্দের অর্থ জানেন না। আসুন নিচের ইনফোগ্রাফিক থেকে এই দুটি শব্দের মধ্যকার পার্থক্য সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া যাক।  আশা করছি এখান থেকে আপনারা ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর পার্থক্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবেন এবং নিজেদের জন্য এর মধ্যে থেকে সঠিক পথটি বেছে নিতে সক্ষম হবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য:

তাহলে নিশ্চয় আপনি বুঝে গেছেন ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং-এর মধ্যেকার পার্থক্যগুলো।

আপনি কখন ফ্রিল্যান্সিং করবেন আর কখন আউটসোর্সিং শুরু করবেন জেনে নিন

এই বিষয়টি জানা খুবই জরুরী। আপনার কখন আউটসোর্সিং আর কখন ফ্রিল্যান্সিং করা উচিত তা নিয়েই আলোচনা করছি এখন।

ফ্রিল্যান্সিং: আপনার অনলাইন ক্যারিয়ারের শুরুতে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন। কেননা শুরুর দিকে হয়তোবা আপনার কাছে বেশি টাকা থাকবেনা তাই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করতে হবে। অথবা আপনার কাছে টাকা থেকে থাকলেও আপনি প্রথম দিকে ফ্রিল্যান্সিং এই করবেন। কেননা আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে করতেই মূলত আউটসোর্সিং করার জন্য প্রস্তুদ হবেন। 

আউটসোর্সিং: আউটসোর্সিং করার মানে হচ্ছে আপনি অন্যকে দিয়ে কাজ করাবেন। আপনার কাজটি যে করে দিবে সে মূলত ফ্রীলান্সিং করবে। আর আপনার যেহেতু ফ্রীলান্সিং করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন সে আপনার কাজটি ঠিকভাবে করছে কিনা। মূলত আপনি যখন ফ্রীল্যান্কিং করতে করতে অনেক সময় পার করবেন যখন আপনার কাছে প্রচুর পরিমানে ফ্রীলান্সিং প্রজেক্ট থাকবে তখনই আপনাকে আউটসোর্সিং করতে হবেন।

কেননা আপনি যদি তখন আউটসোর্সিং না করেন মানে অন্যকে দিয়ে কাজ করে না নেন তাহলে নিজে নিজে একা একা এত্ত কাজ করা সম্ভব হবেনা। তখন আপনার কাজ হবে কাজ নেই আর এস এ বস হিসেবে অন্যদের দিয়ে কাজ গুলো করিয়ে নেয়া। মনে করুন আপনি প্রতিটা কাজ ১০ হাজার টাকায় নিবেন তারপরে তা অন্য নতুন ফ্রীলান্সারদের দিয়ে ৬-৭ হাজার টাকা দিয়ে করিয়ে নিবেন মানে আপনার এখানে প্রতিটা কাজে কোনো কাজ না করেই ৩-৪ হাজার টাকা প্রফিট। কোনো কাজ না করে মানে এই নয় যে আপনাকে কিছুই করতে হবেনা, আপনাকে শুধু কাজ গুলো সুন্দর ভাবে পরিচালনা করতে হবে। এইভাবে আপনি যত খুশি কাজ করতে পারবেন এবং আনলিমিটেড ইনকাম করতে পারবেন।

এছাড়াও আপনার যদি কোনো নিজস্ব বিসনেস থেকে থাকে অথবা আপনাকে যদি কোনো কোম্পাননি একজন মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ করে থাকে। তখনও আপনাকে এই বিসনেস ডেভলপমেন্টের জন্য বিভিন্ন সময় অন্যানো ফ্রীলান্সারদের থেকে বিভিন্ন সার্ভিস আউটসোর্স করতে হবে। আশা করছি এ বিষয়টি নিয়ে আপনি এখন একদম ক্লিয়ার।

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ল্যাপটপ

অনেকেই জানতে চান ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কেমন ল্যাপটপ প্রয়োজন বা কি ধরনের পিসি বিল্ড করবেন। এই প্রশ্নটার উত্তর দেয়া একটু জটিল কেননা আমরা আগেই বলেছি ফ্রিল্যান্সিং অনেক ধরনের কাজের মাধ্যমে করা যায়। এই একেক ধরনের কাজের জন্য একেক ধরনের পিসি প্রয়োজন হয়। এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের অন্য একটি পরিপূর্ণ পোস্ট রয়েছে সেটি পরে নিতে পারেন> বাজেট পিসি বিল্ড

ফ্রিল্যান্সিং শিখুন মোবাইলে

অনেকেই আছেন মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চান। মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং এর কিছু কিছু কাজ শেখা সম্ভব। কিন্তু মনে রাখবেন পিসি দিয়ে কাজ শিখার সাথে কখনো তুলনা হবেনা। কারণ অনেক কাজ আছে যা মোবাইল দিয়ে শিক্ষা গেলেও করা যায়না। কাজ শিখার সাথে সাথে কাজ অনুশীলন করতে পারলে তা একটা ভালো দিক ওই কাজে পারদর্শি হবার জন্য। তাই মোবাইলে কাজ শিখা গেলেও অনুশীলন করা যায়না।

তবে একটা কথা হচ্ছে বাস্তবতার কাছে আমরা অনেকেই পরাজিত যে কারণে পিসি কিনার সামর্থ হয়ে উঠেনা অনেকের। কিন্তু তারপরেও হার মানলে চলবেনা নিজের উপরে আত্মবিশ্বাস থাকলে পিসি ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং শেখা সম্ভব। শুধু তাই নয় এমন কিছু কিছু প্রফেশনাল কাজ রয়েছে যা মোবাইল দিয়েই করা যায়। এই বিষয়টি নিয়ে একটু পরে বলছি তার আগে বলে নেই কিভাবে মোবাইল দিয়ে কাজ শিখবেন সে ব্যাপারে। 

বিষয়টি একদম সহজ আপনি আগে ভাবুন আপনি কি নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। মানে আপনার কোন ধরণের কাজ করতে ভালো লাগবে বা ইচ্ছে করে সেটা খুঁজে বের করুন। তারপরে সেই বিষয়টা নিয়ে ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন ভিডিও দেখুন পাশাপাশি গুগল করে আর্টিকেল পড়ুন বেশি বেশি। এই ভাবে কয়েকটা মাস যেকোনো একটা টপিকের উপরে আপনার শিক্ষা চালিয়ে যান। আশা করছি আপনি সফল হবেন ইনশাআল্লাহ!

এই শিক্ষাটা আপনি সম্পূর্ণ মোবাইল দিয়েই শিখতে পারবেন। বর্তমানে মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্সডিজাইন, কোডিং, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ প্রায় সকল ধরনের কাজেই শিখা সম্ভব। শুধু আপনার শিক্ষার প্রতি সদ-ইচ্ছে থাকতে হবে আর পরিশ্রমে করতে হবে। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং পরিপূর্ন ভাবে শিখা কাজ করা একটি বড়ো চেলেন্স। আর আপনাকে সেই চেলেন্স টি কে নিতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আপনি সফল হবেন ইনশাআল্লাহ! কিছু টাকা হলে তখন ইচ্ছেমতো পিসি বিল্ড করে নিবেন।

মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কি কি কাজ করা যায়

সাবধান: অমুক এপপ্স দিয়ে আয় করুন তমুক সাইটে ক্লিক করে ভিডিও দেখেই আয় করুন এমন কোনো কিছুই বলবনা আমি কারণ এগুলো সম্পূর্ণ স্প্যাম। আগেই বলেছি ফ্রিল্যান্সিং এর এমন কিছু কিছু প্রফেশনাল কাজ রয়েছে যা মোবাইল দিয়েই করা যায়।

আমি কোরার মাধ্যমে একটা বিষয় লক্ষ করছিলাম এবং প্রশ্নটি পেয়েছি, “আমি কি শুধু আমার স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারি? কিভাবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়?” এবং কিছু অন্যান্য অনুরূপ প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তরগুলি ঠিক সহায়ক ছিল না, বেশিরভাগ লোকেরা তাদের প্রতারণামূলক স্কিমগুলি বিক্রি করার চেষ্টা করে এবং কেউ কেউ দাবি করে যে এটি অসম্ভব।

যে ব্যক্তি একটি স্মার্টফোন দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে বেশ সৌভাগ্য অর্জন করেছেন, আমি মনে করি এটি কীভাবে করা যায় তা লোকেদের জানানোর জন্য যথেষ্ট হবে। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা তাদের অনলাই ক্যারিয়ারের প্রথম সফলতাটা অর্জন করেছেন মোবাইলের মাধ্যমে কাজ করে।

প্রথমত, আমি এটা পরিষ্কার করতে চাই যে একটি পিসির মালিকানা নিঃসন্দেহে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করার সেরা উপায়। কিন্তু আপনি যদি এখনও একটি পিসি বিল্ড না করতে পারেন তাহলে কি হবে?

চিন্তা করবেন না। আপনার দক্ষতা দিয়ে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন এমন অনেক উপায় রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ আপনি আপনার স্মার্টফোন দিয়ে করতে পারেন। এমন কিছু কাজ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এর কাজ:

এটি ব্যবহারিকভাবে সবচেয়ে সহজ ফ্রিল্যান্সিং কাজ যা আপনি আপনার স্মার্টফোন দিয়ে করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসাবে আপনার কাজ হল লোকেদের (ব্যক্তি এবং সংস্থা) তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পৃষ্ঠাগুলি পরিচালনা করতে, আরও ভাল সামগ্রী তৈরি করতে এবং তাদের গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করা৷

আপনাকে শুধু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে বুদ্ধিমান হতে হবে এবং জানতে হবে কিভাবে ফলোয়ার বাড়াতে, নাগাল বাড়াতে এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যস্ততা বাড়াতে সাহায্য করতে হয়।

লেখক বা আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ:

আপনি আপনার মোবাইল ফোন দিয়ে ক্লায়েন্টদের জন্য নিবন্ধ, ব্লগ পোস্ট, ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু, ইবুক ইত্যাদি লিখতে পারেন। আপনার যা দরকার তা হল একজন মহান গল্পকার, দ্রুত টাইপিস্ট এবং লিখতে কয়েকটি অ্যাপ।

সবচেয়ে ভালো দিক হল এই অ্যাপগুলির বেশিরভাগই বিনামূল্যে এবং Google Playstore এবং Apple Store থেকে ফ্রিতে পেয়ে যাবেন।

ফ্রিল্যান্স লেখক হিসাবে আপনার যাত্রা শুরু করার জন্য এখানে কিছু দুর্দান্ত লেখার অ্যাপ রয়েছে: Google ডক্স, WPS অফিস, মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট/সহকারীর কাজ:

ভার্চুয়াল সহকারী হিসাবে, আপনার কাজ হল প্রফেশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ, প্রযুক্তিগত বা সৃজনশীল (সামাজিক) সহায়তা প্রদান করা। এর মধ্যে ফোন কলের উত্তর দেওয়া এবং ফোন করা, ইমেল পাঠানো, সামাজিক মিডিয়া ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি পরিচালনা করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

মূলত এই সমস্ত কাজ একটি মোবাইল ফোন দিয়ে অনায়াসেই করা যায়। সুতরাং, আপনি আপনিও করতে পারবেন শুধু লেগে থাকুন।

গ্রাফিক্স ডিজাইনার/ইলাস্ট্রেটর এর কাজ:

মোবাইলে ডিজাইন করার আশ্চর্যজনক বিষয় হল যে আপনাকে কোরেল ড্র এবং অ্যাডোব ইলাস্ট্রেটরের মতো ডেস্কটপ অ্যাপগুলি কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানতে হবে না। আপনি ক্যানভা, একটি ওয়েব ভিত্তিক এবং মোবাইল ডিজাইন অ্যাপ্লিকেশন। এই ক্যানভা অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে সুন্দর ডিজাইন তৈরি করতে পারেন।

এই পোস্টে ব্যবহার করা সকল ডিজাইনগুলি আমি ক্যানভা ব্যবহার করে তৈরি করেছি। গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা ইলাস্ট্রেটর হিসাবে আপনার মোবাইল ফোনে আপনার প্রয়োজনীয় কিছু মোবাইল অ্যাপ এখানে রয়েছে। এগুলো গুগল প্লে স্টোরে অথবা অ্যাপল স্টোরে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।

ব্যক্তিগতভাবে, আমি আমার স্মার্টফোনে ডিজাইন করতে Autodesk Sketchbook Pro এবং Canva ব্যবহার করি। এই 2টি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে আমি অতীতে অনেক ডিজাইন তৈরি করেছি এবং বর্তমানেও করছি। আপনিও শুরু করতে পারেন।

ক্যানভা নিয়ে দারুন-সব গ্রাফিক্সডিজাইন এর ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে আমার ইউটিউব চ্যানেল ঘুরে আসতে পারেন। ইউটিউবে গিয়ে “Marketer Rashed” লিখে সার্চ করুন।

অনলাইন টিউটর এর কাজ:

আপনি আপনার মোবাইল ফোনে অনলাইনে লোকেদের টিউটর করতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে তা হল আপনার দক্ষতার ক্ষেত্রটি জানুন, তারপর আপনার যে জ্ঞানটি রয়েছে সেই জ্ঞানের প্রয়োজন এমন লোকেদের খুঁজে বের করুন।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে কোথায় স্টুডেন্টসদের খুঁজে পাবেন? টেনশন করার একদমি কোনো কারণ নেই কেননা প্রায় প্রতিটা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসেই অনলাইন টিউটরদের জন্য আলাদা করে একটি ডেডিকেটেড ক্যাটাগরি রয়েছে। একটু ঘাটাঘাটি করলেই পেয়ে যাবেন আশা করছি।

আপনার স্মার্টফোন দিয়ে, আপনি ভিডিও বা  অডিওপাঠ এমনকি নিবন্ধ লিখতে এবং আপনার ছাত্রদের পাঠাতে পারেন। মেসেঞ্জার গ্রুপ, গুগল মীট, স্ক্যাপি, জুম, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে ক্লাস নিতে পারেন।

ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করুন:

আপনি যদি ই-কমার্সে আগ্রহী হন তবে শিপিং কিন্তু স্টোর পরিচালনার চাপের মধ্য দিয়ে যেতে চান না, তবে এটি একটি ভালো বিকল্প আপনার জন্য। আপনি Etsy, Shopify, Shutterstock বা Squarespace-এ একটি অনলাইন স্টোর তৈরি করতে পারেন। যেখানে আপনি শুধুমাত্র ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।

আপনি অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন এমন কিছু ডিজিটাল পণ্যর মধ্যে রয়েছে:

কাস্টম চিত্র: ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সার এবং অন্যান্য ডিজাইনারদের দ্বারা ব্যবহার করা যেতে পারে এমন চিত্র বা ডিজাইন তৈরি করুন তারপর সেগুলি Shutterstock বা Adobe Stock এ বিক্রি করুন৷

ছবি: আপনার আশেপাশের, বস্তু বা এমনকি নিজের থেকে উচ্চমানের ছবি তুলুন এবং সেগুলি Shutterstock বা Adobe Stock এ বিক্রি করুন৷

ফর্ম: আপনি কি বিক্রি করবেন সে সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকলে, আপনি Formplus-এ ফর্ম তৈরি করতে পারেন, ডাউনলোড করতে পারেন এবং Etsy-তে সেগুলি বিক্রি করতে পারেন। এছাড়াও আপনি লোকেদের অনলাইন সমীক্ষা তৈরি করতে, ডেটা সংগ্রহ করতে এবং ফর্মপ্লাসে তাদের বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করতে পারেন।

ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করা:

বর্তমানে ইউটিউবিং খুবই জনপ্রিয় একটি আয়ের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা যেন পান্তাভাতে ঘি হয়ে গেছে। তবে এই কাজটা মোটেও কোনো সহজ বিষয় নয়। এর জন্য আপনাকে অনেক সময় এবং পরিশ্রম দিতে হবে। আপনি চাইলে মোবাইল দিয়েই ইউটিউবের জন্য ভিডিও তৈরী করতে পারেন এবং তা নিয়মিত আপলোড করার মাধ্যমে আপনার ইউটিবিং যাত্রা  শুরু করতে পারেন। এটি একটি প্রোফেশনাল কাজ তাই ইউটিউবে এই বিষয় নিয়ে প্রচুর ভিডিও দেখে আপনাকে কাজটাকে ভালোভাবে শিখে নিতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশ

বর্তমানে বাংলাদেশেও বেশ কিছু ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইট গড়ে উঠেছে যারা আপনাকে ফ্রীল্যান্সিং এর কাজ অফার করে থাকে। কিন্তু এখানেও একটি প্রশ্ন থেকেই যায় আর তা হলো আপনার এই সকল বাংলাদেশী সাইটে কাজ করা উচিত কিনা বা করবেন কিনা?

আমি বলবো আপনি যদি এই সেক্টরে একদম নতুন হয়ে থাকেন বা সবে মাত্র শিখতেছেন সেই ক্ষেত্রে আপনি এই সকল বাংলাদেশী সাইটে কাজ করতে পারেন। আসলে আমি এটিকে কাজ করা বলতে চাই না। এটিও আপনার শিখার আপনার অনুশীলন করার একটা পার্ট হবে। কেননা এই সকল সাইটে আপনি কিছুদিন সময় দিলে, পরবর্তীতে আপনি যখন ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেস কাজ করতে যাবেন তখন ভালো একটা সাপোর্ট দিবে আপনাকে।

পরবর্তীতে অবসই আপনি ভালোমানের ইনকামের জন্য ইন্টারনেশনাল মার্কেটপ্লেসে মুভ করবেন। আমি কি বুঝাতে চেয়েছি আশা করছি বুঝতে পেরেছেন। আপাদত্ত নিচে বাংলাদেশী কিছু ফ্রিল্যান্স সাইটের নাম দেয়া হলো গুগল করে এই সাইট গুলো ঘুরে আসতে পারেন।

বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট লিস্ট:

ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট

এখানে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটের লিস্ট দেয়া হলো।

  1. Upwork
  2. Fiverr
  3. Freelancer.com
  4. Toptal
  5. Flexjobs
  6. SimplyHired
  7. Guru 
  8. Behance
  9. 99designs
  10. People Per Hour

ফ্রিল্যান্সিং ইনকাম হালাল না কি হারাম

ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল – এই প্রশ্নটি বর্তমানে বেশ আলোচিত। কেননা আমাদের দেশে দিনেদিনে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং শব্দ দুটি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করছে ।

উইকিপিডিয়া বাংলার তথ্যমতে বাংলাদেশের ছয় লক্ষ তরুণ তরুণী ফ্রিল্যান্স-মার্কেটপ্লেসে জব করছেন। তাই স্বাভাবিকভাবে অনেকের মনে প্রশ্ন আসে – ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং সম্পর্কে ইসলাম কী বলে? এই জব ইনকাম হালাল না কি হারাম?

ফ্রিল্যান্সিং ইনকাম হালাল না কি হারাম

ফ্রিল্যান্সিং শিখুন অনলাইনে সম্পূর্ণ ফ্রী

ফ্রিল্যান্সিং এর কি শিখবেন বা কি শিখতে হবে তা আগে জানুন।

১/ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথম যেকোনো একটি বিষয় মানে কাজে পারদর্শী হতে হবে যেই কাজ দিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন। কি নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করবেন তা যদি আপনার ঠিক হয়ে যায় তার পরে সেই বিষয়টি শিক্ষা শুরু করে দিন। কিভাবে কাজ শিখবেন?

বিষয়টি একদম সহজ আপনি আগে ভাবুন আপনি কি নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। মানে আপনার কোন ধরণের কাজ করতে ভালো লাগবে বা ইচ্ছে করে সেটা খুঁজে বের করুন। তারপরে সেই বিষয়টা নিয়ে ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করুন ভিডিও দেখুন পাশাপাশি গুগল করে আর্টিকেল পড়ুন বেশি বেশি। এই ভাবে কয়েকটা মাস যেকোনো একটা টপিকের উপরে আপনার শিক্ষা চালিয়ে যান। আশা করছি আপনি সফল হবেন ইনশাআল্লাহ!

২/ সর্ব প্রথম যে বিষয়টি প্রয়োজন মানে কাজ শিখা তা আপনার সম্পূর্ণ হয়ে গেলে। তারপরে আপনার কাজ হলো কিভাবে আপনার দক্ষতাটিকে মানে সার্ভিসেস বিক্রি করবেন কোথায় বিক্রি করবেন কিভাবে বিক্রি করবেন এই বিষয়গুলো পরিপূর্ণভাবে শিক্ষা। এই বিষয়গুলো শিখা মানেই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জানতে হবে। 

৩/ আমরা জানি যে অনেক গুলো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস আছে। ধরে নিলাম আপনি ফাইবার মার্কেটপ্লেস আপনার ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন। এখন আপনার কাজ হলো ইউটিউবে বা গুগলে গিয়ে সার্চ করা। কি দিয়ে সার্চ করবেন? বিষয়টি একদম সহজ, আপনার যে বিষয়টি যখন জানার প্রয়োজন হয় তখন সেই বিষয় নিয়েই সার্চ করবেন। যেমন: ফাইবার কাকে বলে, ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম, ফাইবার একাউন্ট ভেরিফাই করার নিয়ম, কিভাবে ফাইবার গিগ তৈরি করবো, ফাইবারে কাজ পাবার টিপস, বায়ারের সাথে কিভাবে কি করবো, কাজ জমা দেয়ার নিয়ম, Fiverr e English test দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল, এখন এই লেখা টা দেখায় । এখন এর সমাধান কী ?  ইত্যাদি ইত্যাদি।

সার্চ করার পরেই দেখবেন আপনার একটি প্রশ্নের জন্য শত শত অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের উত্তর পেয়ে যাবেন। এই বার এই উত্তর গুলো ইচ্ছে মতো ঘাটাঘাটি করুন আর কম্পেয়ার করে সবথেকে বেস্ট টি শিখেনিন। এই ভাবে প্রতিনিয়ত শিখতে থাকুন। এই ভাবে শিক্ষা থেকে আপনি যে উপকার পাবেন সেটা দুনিয়ার সবথেকে বড় কোনো ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েও পাবেন না।

আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাইলে আমাদের এই বিষয়ে একটি পরিপূর্ণ পোস্ট রয়েছে সেটা পরে নিতে পারেন> ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব !

ফ্রিল্যান্সিং কোর্স

উপরে যেই বিষয় গুলো বলে দিলাম তা বুঝে থাকলে আমার মনে হয়না আপনার আর কোথাও থেকে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার প্রয়োজন আছে। বরংচ আপনার সামর্থ থাকলে কোনো একটি স্কীল শিখে নিতে পারেন ভালো কোনো মেন্টরের কাছ থেকে। যেটা দিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করবেন। কোর্স করতে না পারলেও কোনো সমস্যা নেই শুধু শুরু করে দিন ইনশাআল্লাহ আপনি সফল হবেন।

ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসা সমূহ এবং তার উত্তর:

ফ্রিল্যান্সিং কি ?

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি মুক্ত পেশা মানে বাধাহীন ভাবে নিজের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় থেকে অন্য কারো আদেশ ব্যতীত সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছেতে করা কোনো কাজ।

ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার?

ফ্রিল্যান্সিংটাই মূলত একটা প্রকার। এটার আরো প্রকারভেদ করাটা মুশকিল। তবে সাধারণভাবে ফ্রিল্যান্সিং কে দুই ভাগে ভাগ করা যায় ১: অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং ২: অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং। এখন প্রশ্ন আসতে পারে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কি? আর অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং কি? উত্তর নিচে দেখুন-

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর যে সকল কাজ অনলাইনে মানে ইন্টারনেট কানেক্শন মাধ্যমে করা হয় তাকে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং বলে।

অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর যে সকল কাজ অফলাইনে মানে ইন্টারনেট কানেক্শনের ব্যতীত করা হয় তাকে অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং বলে।

ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন এর পেছনে অনেকগুলো রিজোন থাকতে পারে। যেমন ধরুন কাজের স্বাধীনতা। আপনি যদি নিজের ইচ্ছে মতো কোনো কাজ করতে চান, নিজেই যদি নিজের কাজের বস হতে চান অথবা নিজের ইচ্ছে মতো কাজ বাছাই করতে চান ইত্যাদি ইত্যাদি। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার বেস্ট অপশন।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করবো?

ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথমে কাজ শিখতে হবে। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এমন অনেক কাজ আছে। আপনার যেই কাজটি সব থেকে বেশি ভালো লাগে আপনি সেটি দিয়েই শুরু করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন যেটি দিয়েই শুরু করেন না কেন প্রথমে ঐকাজটিকে খুব ভালোভাবে শিখতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করা যায়?

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ: ডিজাইনিং, আর্টিকেল রাইটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এট্রি, আইটি ও নেটওয়ার্কিং, কাস্টমার সার্ভিস, সেলস এবং মার্কেটিং, ভারচুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব?

ইউটিউব দেখে দেখে এবং গুগলে সার্চ করে আর্টিকেল পরে প্রথমদিকে শিখা শুরু করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা কিভাবে হাতে আসে?

একেবারেই সোজা ব্যাপার। বরং আয় করাটাই একটু কঠিন ব্যাপার। আমাদের দেশে পেওনিয়ার একাউন্ট চালু আছে। অধিকাংশ মার্কেট প্লেস এই পেওনিয়ারের মাধ্যমে পেমেন্ট দেয়। আপনি একটি পেওনিয়ার একাউণ্ট আর একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন। আর পেওনিয়ার একাউন্টটি ভেরিফাই হয়ে গেলে এর সংগে ব্যাংক একাউন্টটি লিংক করে দিবেন ব্যাস হয়ে গেল। যখনি আপনার পেওনিয়ার একাউন্টে টাকা জমা হবে তখন টাকাটি ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করবেন। চলে আসবে আপনার টাকা।
আরো মজার বেপার হলো বর্তমানে ২০২২ সলে এসে পেওনিয়ার থেকে এখন বিকাশের মাধ্যমে টাকা আনা যাচ্ছে 🙂

পেওনিয়ারের সাথে বিকাশ লিংক করার প্রসেসঃ

ইতিমধ্যে অনেকেই জেনে গিয়েছেন পেওনিয়ার থেকে এখন বিকাশে টাকা আনা যাবে ইনস্ট্যান্ট। বিকাশ দিয়ে টাকা আনতে পারবে ২৪/৭ যেকোনো সময়ে, ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোনো আমাউন্ট আনতে পারবে, এর জন্য থাকা লাগবে না কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।

বিকাশ অ্যাপ ওপেন করে রেমিটেন্স আইকনে ক্লিক করুন> লিংক পাইওনির অ্যাকাউন্ট সিলেক্ট করুন> ক্লিক করার পর পাইওনির হোস্টেড পেজে নিয়ে যাবে যেখানে আপনার ইমেইল/ইউজার নাম দিয়ে পাসওয়ার্ড দিতে হবে যদি সব ঠিক থাকে একটা ওটিপি আসবে আপনার মোবাইলে যেটা পাইওনিরে রেজিস্টারড করা> ওটিপি ঠিক ভাবে দেয়ার পর আপনার পাইওনির একাউন্ট বিকাশ একাউন্টের সাথে লিংক হয়ে যাবে> লিংক হয়েছে কিনা সেটা একটি পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানতে পারবেন।

সম্ভাব্য প্রশ্নঃ 

পাইওনির থেকে টাকা আনতে যে ২% চার্জ দেয়া লাগতো সেটা বিকাশে আনতে গেলেও কি চার্জ দিতে হবে?

উত্তর:-হ্যাঁ, পাইওনির এই ফি যেকোনো মাধ্যমে টাকা আনার সময় লাগবে সেটা বিকাশ বা অন্য যেকোনো মাধ্যমই হোক না কেনো।

বিকাশ আলাদা কোনো চার্জ রাখবে কিনা?

উত্তর:-না

ব্যাংকের মতো সর্বনিম্ন টাকা উঠানোর কোনো লিমিট আছে কিনা আর থাকলে কতো?

উত্তর:- হ্যাঁ আছে, সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা উঠাতে হবে।

কারেন্সি রেট ক্যামন হবে?

উত্তর:-ব্যাংকের কারেন্সি রেট অনুযায়ী দেয়া হবে যা সচরাচর সব জায়গায় একই হয়।

পাইওনির সার্ভিস অ্যাপ থেকে একটিভ না করতে পারলে কি করনীয়?

উত্তর:- আপনি আইকনে ক্লিক করলে আপনার এনআইডির মাধ্যমে কেওয়াইসি ইনফরমেশন দিয়ে ভেরিফিকেশন হয়ে সাথে সাথে একটিভ হয়ে যাবে। বিকাশ একাউন্ট ওপেন এর সময় দেয়া এনআইডি এবং এই কেওয়াইসি এর সময় সাবমিট করা এনআইডি একই হতে হবে।

আমার কি বিকাশের সাথে নতুন একাউন্ট খুলে লিংক করতে হবে নাকি যে একাউন্ট আছে সেটা লিংক করতে পারবো?

উত্তর:-আপনার যে একাউন্ট করা আছে সেটা লিংক করতে পারবেন কিন্তু আপনার আগের বানানো পাইওনির একাউন্ট আর বিকাশের রেজিস্টারড বিকাশ একাউন্টের নামের সাথে ম্যাচ করতে হবে।

আরও বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করে দেখতে পারেন। https://www.bkash.com/bn/payonee

আরো অনেক রকম পদ্ধতি আছে। টাকা আনা নিয়ে কোন টেনশান নেই আগে আয় করতে শুরু করুন।

নোট: আপনার যদি পেয়োনিয়ারে একাউন্ট করা না থাকে তাহলে এখুনি এই লিঙ্কে গিয়ে করে নিতে পারেন। এখান থেকে করলে ৫০ ডলার বোনাস পাবেন! SingUp Now For Payoneer Account

ফ্রিল্যান্সিং এর কোন কাজটি শিখলে খুব তাড়াতাড়ি আয় করা যায়?

যে কোন কিছু ভালো করে শিখলেই তাড়াতাড়ি আয় করা সম্ভব। তবে অনেকে তাড়াতাড়ি আয়ের কথা মাথায় রেখে যখন কাজ শিখতে যায় কাজটা ভালো করে আর শেখা হয়না। তবুও আপনি জানতে চেয়েছেন কোন কাজ শিখলে তাড়াতাড়ি আয় করতে পারবেন? সেই কাজটা হলো, SEO . এই কাজটা যদি ভালো করে শিখতে পারেন তাহলে আপনি খুব দ্রুত কাজ পেয়ে যাবেন আশাকরি।

যে কাজ এর চাহিদা বেশি, কিন্ত সেই অনুযায় দক্ষ ফ্রিলান্সার তো বটেই সেমি দক্ষ ফ্রিলান্সার অনেক কম। এপ ডেভলপিং কাজের অনেক চাহিদা, এই কাজ শিখলে তাড়াতাড়ি আয় এর সুযোগ তবে শর্ত এই কাজ শিখতে আবার সময় লাগবে। এটাই সমস্য,ফ্রিলান্সিং যে কাজ শিখতে একটু কঠিন লাগবে, একটু সময় বেশি লাগবে, সেটাতে কাজ শেখার পর খুব তাড়াতাড়ি আয় আসবে। কিন্ত যে কাজ খুব দ্রুত শেখা যায়, সে কাজে কাজ পেতে দেরি হবে।

কতদিনে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা উপার্জন করা সম্ভব?

এটি কাজের সেক্টরের উপর নির্ভর করে। এখানে স্পষ্ট যে আপনি এই বিষয়ে একদম শুরু থেকে জানতে চাচ্ছেন। হ্যা আপনি চাইলে আপনার ফ্রিল্যন্সিং শুরু করার প্রথম সপ্তাহেই হয়তো ইনকাম শুরু হয়ে যেতে পারে, কিন্তু, এটা আপনার স্কিল / কর্মদক্ষতা এবং আপনার অভিজ্ঞতার অপর নির্ভর করে, আপনি যদি ভালো কাজ কোরতে পারেন এবং তার যথেষ্ট প্রমান দিতে পারেন তাহলে আপনি কাজ তারাতারি পেয়ে যাবেন।

আর যদি আপনার কোন স্কিল / কর্মদক্ষতা এবং ধৈর্য কনোটাই না থাকে তাহলে কোনদিনও হয়তো পারবেন না। আপনার আগে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে, এখানে কাজ আসলে কিভাবে পাওয়া যায়, কিভাবে কাজগুলো নিতে হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে।

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য কি?

কেউ যদি অন্য কারো কাজ মুক্তভাবে করে সেটাই ফ্রিল্যান্সিং অন্যদিকে কেউ কাউকে দিয়ে যখন কোনো কাজ করিয়ে নেন সেটাই আউটসোর্সিং।

ফ্রিল্যান্সিং উপসংহার:

প্রিয় ভাইবোন আমি চেষ্টা করেছি এই দীর্ঘ আর্টিকেলে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন রিসোর্সের আলোকে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আপনাদের জানানোর। আমি আশাবাদী আপনি এর থেকে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জেনে নিতে পেরেছেন। তারপরেও আপনার কোনো ধরনের প্রশ্ন/মতামত থেকে থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন আমি উত্তর দেব ইনশাআল্লাহ!

আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন হয়ে থাকুন> Freelancing Help Bangla

Exit mobile version